আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে সেমিনার হলের মধ্য়ে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল। তারপর থেকেই আরজি কর নিয়ে একের পর এক কেলেঙ্কারির কথা সামনে আসতে শুরু করেছে। আরজিকরের প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ সামনে আসছে। এবার জানা যাচ্ছে টেন্ডারের ক্ষেত্রে বড়সর অসংগতি ছিল। ইতিমধ্য়েই এই ঘটনায় বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে হাওড়ার একটি জেরক্স দোকানের মালিকের সঙ্গে যোগসাজশ করে ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করা হত। পরে সেই নথিগুলো বিভিন্ন কোম্পানির নাম করে প্রিন্টিং প্রেসে ছাপানো হত। তার ভিত্তিতেই টেন্ডারে এগিয়ে যেত অসাধু ব্যবসায়ীরা। আর সবক্ষেত্রে অভিযুক্তদের মাথায় সন্দীপ ঘোষের হাত থাকত বলে অভিযোগ। যার জেরে যাবতীয় অনিয়ম করেও রেহাই পেয়ে যেত ওই দুর্নীতিগ্রস্ত ভেন্ডাররা। অভিযোগ এমনটাই।
বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা। দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। আরজি কর দুর্নীতি মামলার চার্জশিটে সেই দুর্নীতির কৌশল নিয়ে নানা কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুয়ো নথি তৈরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছিল। হাওড়ায় বিপ্লবের বাড়ি। তার কাছেই রয়েছে জেরক্সের দোকান। ওই দোকানের মালিকের কাছে ভুয়ো লেটার হেডের কপি পাঠানো হয়েছিল। পিডিএফ কপি অনলাইনে পাঠানো হত। অথবা এক আত্মীয়ের মাধ্যমে পাঠানো হত। এরপর ওই জেরক্সের দোকানে চলত নানা কারিকুরি। সেখানে পুরো নথিটার কপি তৈরি করে তা প্রিন্ট করা হত অন্য জায়গা থেকে। আন্দুল রাজমাঠ এলাকার একটা প্রিন্টিং প্রেসে সেগুলি ছাপানো হত। সুমন ও বিপ্লবের সংস্থার নামে তৈরি হত ভুয়ো নথি ও ভুয়ো লেটার হেড।
এদিকে ভুয়ো নথি তৈরির বিনিময়ে মোটা টাকা দেওয়া হত জেরক্স দোকানের মালিককে। সুমনের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা পেয়েছিলেন জেরক্সের দোকানের ওই মালিক। ভুয়ো নথি তৈরির করে দেওয়ার বিনিময়ে বিপুল টাকা দেওয়া হয়েছিল। আর বিপ্লব এই কাজের জন্য দিয়েছিলেন ১ লাখ টাকা। আর সেই নথি দেখিয়েই হয়েছিল টেন্ডার প্রক্রিয়া।
তবে অভিযোগ উঠেছে এই সব কিছু হয়েছিল সন্দীপ ঘোষের মদত। তার হাত ছিল বিপ্লব সুমনদের মাথায়। তার জেরে সব কিছু করেও পার পেয়ে গিয়েছিল সুমন বিপ্লবরা। তবে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকেই। আর কারা জড়িত এই ঘটনায় সেটা কি এবার সামনে আসবে?