ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সংগ্রহশালায় নেতাজির নকল চিঠি থাকতে পারে তা কোনওদিন কেউ ভাবতেই পারে না। সেখানে সেটা প্রদর্শিত করে রাখা ছিল। যা নিয়ে এই সংগ্রহশালার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে বাধ্য হন সুগত বসু। তখন টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। তারপর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ‘ভুয়ো’ চিঠি সরিয়ে নিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। এই চূড়ান্ত গাফিলতি নিয়ে মেমোরিয়ালের অন্দরেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ এটা দেশের কাছে অপমানজনক।
নেতাজির চিঠি ভুয়ো এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে নেতাজি রিসার্চ ব্যুরো। সুগত বসুর চিঠি পেয়ে তখন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার কথা জানায়। এরপর সুগত বসুকে জানানো হল, সংশ্লিষ্ট চিঠি সরানো হয়েছে। চিঠি সরানো হলেও এতবড় ভুল কিভাবে হল? তা কিন্তু ব্যাখ্যা করেনি কর্তৃপক্ষ। এখন প্রশ্ন উঠছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এই ভুয়ো চিঠি পেলে কি করে?
উল্লেখ্য, ২৩ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ‘নির্ভীক সুভাষ’ নামে স্থায়ী একটি গ্যালারি এবং অন্যান্য বিপ্লবীদের নিয়ে ‘বিপ্লবী ভারত’ নামে একটি গ্যালারির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই নেতাজির ভুয়ো চিঠি প্রদর্শিত হচ্ছে। ইতিহাসবিদ সুগত বসুর অভিযোগ, ১৯২১ সালের ২২ এপ্রিল সিভিল সার্ভিস থেকে নেতাজির ইস্তফার চিঠিটি শোভা পাচ্ছে ভিক্টোরিয়ায়, কিন্তু সে চিঠির হাতের লেখা নেতাজিরই নয়। এমনকী চিঠিতে অজস্র বানানও ভুল আছে। সুগত বসুর দাবি, মহম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছদ্মবেশে নেতাজির যে ছবি ভিক্টোরিয়ায় প্রদর্শিত হচ্ছে তার কোনও বাস্তব অস্তিত্ব নেই। সব মিলিয়ে নেতাজিকে নিয়ে ব্যাকফুটে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি বসু পরিবারের দাবি, আসল চিঠিটি ১৯৭১ সালে লন্ডন থেকে সংগ্রহ করে এনেছিলেন নেতাজির ভ্রাতুষ্পুত্র শিশিরকুমার বসু এবং কৃষ্ণা বসু। বিগত ৫০ বছর ধরে আসল চিঠিটি রাখা আছে এলগিন রোডের নেতাজির বাড়িতে, মিউজিয়ামে। কৃষ্ণা বসুর ‘ইতিহাসের সন্ধানে’ বইতে সেই চিঠিটি তুলে ধরা হয়েছে। সুগত বসুর দাবি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে রাখা সেই চিঠির উৎস জানানো হয়নি।