বর্তমানে বাড়ছে অনলাইনে প্রতারণা। আর সেইসঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতারণার পদ্ধতি বা ধরণও বদলাচ্ছে প্রতারকরা। সিবিআই বা পুলিশ অফিসার সেজে এবার বাড়িতে হানা নয়, স্কাইপের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মহিলার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হল ৫১ হাজার টাকা। এভাবেই সাইবার দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হলেন কলকাতার এক মহিলা। ইতিমধ্যেই ঘটনায় তিনি কলকাতা সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পুরীতে হোটেল বুকিং করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার বিচারক, দোষী সাব্যস্ত হল ২ জন
জানা যাচ্ছে, কলকাতার ওই মহিলা একটি কোম্পানির সচিব। মহিলার বয়ান অনুযায়ী, গত ৬ জুন তাকে একজন দিল্লি পুলিশের অফিসার পরিচয় দিয়ে ফোন করেন। ফোনে মহিলাকে জানানো হয়, তাঁর ৩৫ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং সেগুলি বিভিন্ন অপরাধীদের টাকা পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এরপর টাকা নয়ছয়ের মামলায় মহিলাকে গ্রেফতারের হুমকি দেওয়া হয়। তাতে স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলে মহিলা। এরপর ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি মহিলাকে স্কাইপ ডাউনলোড করতে বলেন। জানানো হয়, স্কাইপে ভিডিয়ো কলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সেইমতোই মহিলা স্কাইপ ডাউনলোড করেছিলেন। স্কাইপে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সম্পূর্ণ একটি আলাদা ঘরে থাকতে বলা হয়েছিল, যাতে কেউ বিরক্ত করতে না পারে।
এদিকে, মহিলার কাছ থেকে আধার কার্ডের তথ্য নেওয়া হয়েছিল। স্কাইপে ভিডিয়ো কলের সময় একজন সিবিআই অফিসারের পরিচয় দিয়ে মহিলাকে বলেন তার অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা পাঠাতে হবে। এভাবে অ্যাকাউন্ট যাচাই করা হবে। যাচাই হয়ে গেলে ১৫ মিনিট পর আবার টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তবে মহিলাটি প্রথম আপত্তি জানালে তাঁকে হুমকি দিয়ে জানানো হয় তিনি যেহেতু মামলায় একজন সন্দেহভাজন তাই যদি তিনি যাচাইয়ের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর না করেন তাহলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
ভয় পেয়ে মহিলাটি তার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় অবস্থিত ‘শ্রী ললিতা এজেন্সি’ নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫১ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু, সেই টাকা আর ফেরত পাননি মহিলা। এরপর আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তখন তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং তাকে পুলিশ বা সিবিআই অফিসার সেজে যারা ফোন করেছিল তারা সকলেই ভুয়ো। ঘটনায় তিনি কলকাতার সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান। পাশাপাশি ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর নেট ব্যাঙ্কিংয়ের আইডিও ব্লক করে দেন। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।