আরজি কর হাসপাতালকাণ্ডে উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরে চিকিৎসক সংগঠনের দুই নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় ডাক্তারি পড়ুয়ারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুই চিকিৎসক নেতা পুণ্যব্রত গুণ ও কৌশিক চাকির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। এদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খোলা আছে। আলোচনা করে রফাসূত্র খোঁজার কাজ প্রশাসনকে চালাতে হবে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রোগী পরিষেবা বিঘ্নিত হতে দেওয়া যাবে না। ইনডোর ও আউটডোরে চিকিৎসা পরিষেবা মসৃণ রাখতে হবে। যাঁরা কাজ করতে আসছেন না, তাঁদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
এর আগে, গতকাল দুপুরে মোহিত মঞ্চে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পাঁচ সদস্যের মেন্টর গ্রুপ। চারজন বিধায়ক ও এক সাংসদকে নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৈঠকে বসেন বিধায়ক তাপস রায়, নির্মল মাঝি, অতীন ঘোষ, সুদীপ্ত রায় ও সাংসদ শান্তনু সেন। কিন্তু সেখান থেকে কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি বলে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের তরফে জানা গিয়েছে। আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের লাগাতার কর্মবিরতির জেরে ইতিমধ্যেই চিকিত্সা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে জরুরি বিভাগ থেকে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে। যে রোগীরা হাসপাতালে ভরতি আছেন, তাঁদের অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালের সব কাজকর্মই স্বাভাবিক আছে। রোগীদের চিকিত্সা ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা হচ্ছে না। এদিকে আন্দোলকারীদের মতে, রোগী ও তাঁদের পরিজনদের দুর্ভোগের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই দায়ী।
তবে পড়ুয়াদের এই আন্দোলনের মধ্যে অন্য একটি বিষয়ও উঠে আসছে। জানা যাচ্ছে, একসময়ে আর জি কর হাসপাতালে সাংসদ শান্তনু সেনের আধিপত্য চললেও তাঁর জায়গায় বেলগাছিয়া–কাশীপুরের বিধায়ক অতীন ঘোষ প্রভাব বিস্তার করেছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শাসক দলের এই দুই নেতার মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ুয়াদের এই আন্দোলন নতুন মাত্রা পেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিনের এই এফআইআর দায়েরের পর আন্দোলনের গতি প্রকৃতি এখন কোন দিকে যায়, এখন সেটাই দেখার।