বারো ঘণ্টা পরও জ্বলছে ট্যাংরার চর্ম কারখানা ও গুদামের আগুন। আগের থেকে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে এখনও চারিদিকে ‘পকেট ফায়ার’ আছে। তারইমধ্যে আগুন নেভাতে গিয়ে আহত হয়েছেন তিনজন দমকলকর্মী। স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে কয়েকজন দমকলকর্মী আক্রান্তও হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সন্ধ্যা ছ'টা নাগাদ ট্যাংরার তিন নম্বর মেহের আলি লেনের ওই চর্ম কারখানা এবং গুদামে লেগে যায়। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে আগুন। ঘিঞ্জি এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকে রীতিমতো বেগ পেতে হয়। কারখানার মধ্যে প্রচুর দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছিল না আগুন। গুদাম থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে থাকে। তারইমধ্যে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে দমকলের ১৫ টি ইঞ্জিন। অবশেষে রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন। ঘণ্টাদুয়েক আগেও আগুনের তীব্রতা যতটা ছিল, তা কিছুটা কমেছে।
তবে উদ্বেগ এখনও কাটেনি। দমকল সূত্রে খবর, প্রচুর দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় কারখানার ভিতরে ‘পকেট ফায়ার’ রয়ে গিয়েছে। তা নেভানোর জন্য দমকলকে কারখানার ভিতরে ঢুকতে হবে। কিন্তু আপাতত সেই কাজটাই করা যাচ্ছে না। কিন্তু কেন? দমকল সূত্রে খবর, কারখানার দুটি প্রবেশের মুখ আছে। সেই প্রবেশপথ দিয়েই জল দিচ্ছিলেন দমকলকর্মীরা। সঙ্গে আছে টিনের আস্তরণও। কারখানার ভিতরে ঢুকতে গেলে টিন এবং প্রবেশপথ পুরোপুরি কেটে ভিতরে ঢুকতে হবে। কিন্তু ১২ ঘণ্টা আগুন জ্বলতে থাকায় প্রচণ্ড তাপ হয়েছে। আপাতত সেই টিনের আস্তরণ কাটা দুষ্কর হয়ে উঠেছে।
সেইসঙ্গে গুদামের পাঁচিল রীতিমতো বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। দু'তলা সমান দেওয়ালের কোনও পিলার নেই। প্রবল তাপে ইতিমধ্যে পাঁচিলের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরা হয়েছে। তা যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও শনিবার রাতে ঘটনাস্থলে এসে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে কলকাতা পুরনিগমের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সেই পাঁচিল ভেঙে ফেলা হবে।
কীভাবে আগুন?
প্রাথমিকভাবে অনুমান, গুদামে ওয়েলডিংয়ের সময় আগুন লেগে গিয়েছে। প্রচুর রাসায়নিক, ফোমের মতো দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় দ্রুত ছড়াতে থাকে আগুন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দিনকয়েক আগেই গুদামে নয়া জিনিসপত্র এসেছিল। গুদামের মধ্যে তা থরে থরে সাজানো ছিল। ফলে আগুন লাগতে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে এবং ভয়াবহ আকার ধারণ করে।