ব্যাবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত সদ্য চালু হওয়া বাংলা নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক অভিষেক সেনগুপ্ত এখনও ফেরার। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। বুধবারে ঘটনায় যুক্ত গাড়ির চালক-সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল লালবাজারের গোয়েন্দারা। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে আরও পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।এদিন বিকেলে ধৃতদের আদালতে তোলা হলে, পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পাঁচ জন ধৃতরা হল, অনির্বাণ কাঞ্জিলাল, অর্ঘ্য সেনগুপ্ত, রাজু মণ্ডল, জুলফিকার আলি এবং আশরাফ আলি। প্রথম তিনজন কলকাতার দক্ষিণ শহরতলীর বাসিন্দা হলেও সন্দেহভাজন জুলফিকার ও আশরাফ উত্তর ২৪ পরগনার সাসানের বাসিন্দা।এই ঘটনায় আরও অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মুরলিধর শর্মা।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সুইটি নাথরায় নামের এক গৃহবধূ কসবা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন যে, তাঁর স্বামী অজিত রায়কে সিবিআই অফিসার সেজে কয়েকজন লোক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। এর পর ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে অজিতবাবুর পরিবারকে বারবার ফোন করতে থাকে অভিযুক্তরা। তবে অপহরণকারীরা প্রথমে ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত ১৫ লক্ষ টাকায় রফা হয়। অজিতবাবুর পারিবারিক এক বন্ধু সেই টাকা অপহরণকারীদের দিলে, পরে অজিতবাবুকে ছেড়ে দেয় অভিযুক্তরা। তিনি বাড়ি ফিরে জানিয়েছিলেন, কয়েকজন তাঁকে গাড়িতে তুলে নিজাম প্যালেসের নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে বাইরেই বসিয়ে রাখা হয়। এর পর তাঁর কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা চায় অপহরণকারীরা বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নিজেদের সিবিআই অফিসার হিসাবে দাবি করা স্বরূপ রায় ও প্রতীক সরকারক গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অপহৃত ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ওই সাংবাদিকও নিজেকে সিবিআই অফিসার হিসাবে পরিচয় দিয়েছিল। এছাড়াও অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ির চালক রাজেশ অধিকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে অন্যতম অভিযুক্ত বাংলা টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক অভিষেক সেনগুপ্ত ঘটনার পর থেকেই ফেরার।
রিপাবলিক বাংলা নিউজ চ্যানেল একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, অভিষেক সেনগুপ্ত তাদের চ্যানেলের অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তাকে চ্যানেল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। জারি করা বিবৃতিতে ওই সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করে চ্যানেল বলেছে, ‘এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা রয়েছে সংস্থার। বাংলা চ্যানেলটি আরও জানিয়েছে, এই ঘটনার পর থেকে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও, তা ধরেনি অভিষেক।