পূর্ণিমায় ভরা কোটালে এবার উপচে বাইরে চলে এল আদি গঙ্গার জল। আর তাই এখন কালীঘাট এলাকায় ভাসাভাসি অবস্থা। আর সেই জল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়ে জলমগ্ন করে দিয়েছে ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব চিত্র। এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ির গেট থেকে সদর দরজা পর্যন্ত বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রাজ্যের বন্যা দুর্গতদের কাছে ছুটে গিয়েছেন, গ্রামবাংলার প্লাবিত অবস্থা পরিদর্শন করছেন, মানুষের কাছে ত্রান পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন তখন নিজের বাড়িই ডুবল টালি নালার জলে। তবে পাঁশকুড়ায় থাকাকালীন তাঁর কাছে খবর যায় বাড়িতে জল ঢুকেছে।
এই পরিস্থিতিতে সাবধান করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির সদস্যদের। কোটালের জল নামতে সময় লাগবে বলেও জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বানভাসী পরিস্থিতির মধ্যেই যখন তিনি দাঁড়িয়ে তখন তাঁর বাড়ি থেকে ফোন আসে। ফোন করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি ও এলাকার পরিস্থিতির কথা তাঁকে জানান। যেটা শুনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গতদের মাঝে দাঁড়িয়েই বললেন, ‘আমার কাছে এখন ফোন এল, আমরা যেখানে থাকি, অতো উঁচু করে বাঁধিয়ে দিয়েছি গঙ্গা। তাও লাস্ট সিঁড়ি পর্যন্ত জল চলে এসেছে। আমি ফোন করে বললাম লতাকে, লতা আমার সঙ্গেই থাকে, ওঁ অভিষেকের মা। ওঁকে বললাম শিগগিরি পাশে সরে যা।’
আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টে জামিন পেলেন কলতান, আদালতের দৌলতে জুটল রক্ষাকবচ
কালীঘাটের বাড়ির পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে টালি নালা। ভরা কোটালের জেরে গঙ্গায় জল বেড়ে যায়। সেটাই চলে আসে এলাকায়। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি এখানে হওয়ায় আগেও বেশ কয়েকবার সেখানে জল ঢুকেছে। তবে এবারের জলের পরিমাণ আগের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন বন্যা পরিস্থিতি দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী তখনই তাঁর কাছে খবর আসে যে নিজের বাড়িতেই জল থইথই করছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভরা কোটালের জল ঢুকেছে আমার বাড়িতেও। আমি খবর পেয়ে সবাইকে সাবধানে সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেছি। ওই জল নামতে ৩–৪ ঘণ্টা সময় লাগবে।’
এছাড়া দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলা এখন প্লাবিত। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ডিভিসির জল ছাড়ার জেরে। তাই দু’দিন ধরে সেসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটের বাড়ির পরিস্থিতি তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘সমস্ত গলিটলি সব জলে ডুবে গিয়েছে। এতো জল। এটা এখন চলবে কটা দিন। গতকালকে পূর্ণিমার কোটালও গিয়েছে। তারপর যদি রোদ থাকে তাহলেও তিন চারদিন সময় লাগবে।’