গত কদিনের নাগাড়ে বৃ্ষ্টি এবং ডিভিসির না জানিয়ে ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। এই বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রী, বিধায়ক–সাংসদকে মাঠে নামিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই বন্যার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই প্রত্যেক জেলায় তৎপর হয়েছে প্রশাসন। এবার বন্যা পরিস্থিতির হাল হকিকৎ সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েকটি জায়গা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, আজ বুধবার হাওড়া, হুগলির কিছু এলাকায় যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুরে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। কারণ উদয়নারায়ণপুর ও আমতায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে চিন্তিত তিনি।
এদিকে কালীঘাটের বাড়ি থেকে বেরিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। দ্বিতীয় হুগলি সেতু হয়ে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাবেন তিনি বলে সূত্রের খবর। সেখানে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হুগলির খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেও যেতে পারেন বলে সূত্রের খবর। হাওড়ায় একদিন আগেই রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়, জেলাশাসক পি দীপাপপ্রিয়া, স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা ঘুরে গিয়েছেন। হাওড়ার নিম্ন দামোদর এলাকায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। আমতায় দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে আজ বুধবার কয়েক হাজার কিউসেক জল বেশি ছাড়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শাক–সবজির বাজারে আগুন দর, সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পেঁয়াজ, বানভাসী অবস্থা দায়ী
অন্যদিকে এই জল ছাড়ার পর বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গ্রামবাংলায়। এই আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরেজমিনে বন্যাবিধ্বস্ত নানা এলাকা পরিদর্শন করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সাড়ে তিন লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে ডিভিসি থেকে। আমি নিজে ডিভিসির সঙ্গে কথা বলেছি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এত জল এর আগে ছাড়া হয়নি। যখন ৭০–৮০ শতাংশ জল ভরে যায়, তখন কেন জল ছাড়ে না ডিভিসি? কেন্দ্র ড্রেনেজ করে না। নিজেদের রাজ্যগুলিকে বাঁচাচ্ছে। আর সবটা বাংলার উপরে চাপিয়ে দিচ্ছে। বাংলা আর কত বঞ্চনা সহ্য করবে? পরিকল্পনা করে বাংলাকে ডুবিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের জলে বাংলা প্লাবিত হচ্ছে। আর এটা ম্যান মেড বন্যা।’
এছাড়া হুগলির আরামবাগ, গোঘাটের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। খানাকুলে রূপনারায়ণ নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দিক থেকে শিলাবতী এবং আরামবাগের দিক থেকে দ্বারকেশ্বর—দুই নদীর মিলিত জলে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাই মন্ত্রী বেচারাম মান্না এবং সাংসদ দীপক অধিকারীকে (দেব) পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছিল। বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বর্ধমান–সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। একদিন আগেই রাজ্যবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলের পথে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।