একদিকে অতিবৃষ্টি অপরদিকে ডিভিসির জল ছাড়ার জেরে গ্রামবাংলা এখন বানভাসী। আজ, বৃহস্পতিবারও ৮০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে জেলাগুলিতে। এই আবহে পাঁশকুড়ায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঁশকুড়ার পর উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী। তবে বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং ডিভিসিকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর দুর্গতদের পাশে থাকতে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানের পাল্টা বন্যা বিধ্বস্তদের জন্য ‘অভয়া ক্লিনিক’ গড়ে তোলার ঘোষণা করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নানা দাবি তাঁরা তুলেছেন রাজ্য সরকারের কাছে। যার ৯৯ শতাংশ পূরণ করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি। তাই মুখ্যমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে বলেছেন। এমনকী মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ গতকাল বৈঠকের যে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন তাতে জুনিয়র ডাক্তারদের মনে করিয়ে দেন বন্যা পরিস্থিতি। আর কাজে ফেরার অনুরোধ করেন। এই আবহে আজ আবার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বান, ‘আমি চিকিৎসকদের বলব, এই জল নেমে গেলে সাপের কামড়, ডায়রিয়া, জ্বর হবেই। মেডিক্যাল শিবির যে করব, এখনও কাজে যোগদান হয়নি। আমি আমার সাধ্যমতো করেছি। মানুষ বন্য়ায় আক্রান্ত। এটা রাজনীতির সময় নয়।’
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বর মাসের বাকি দশদিন বন্ধ থাকবে টয়ট্রেন পরিষেবা, দার্জিলিং–শিলিগুড়ি রুট থমকে
মুখ্যমন্ত্রীর এই আহ্বানের পর স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধরনা থেকে রাজ্যের বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ শিবির ও অভয়া ক্লিনিক চালু করার ঘোষণা করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই বিষয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, ‘গোটা পশ্চিমবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দুর্গত এলাকার সংখ্যা বাড়ছে। ডিভিসি প্রচুর জল ছেড়েছে। এটা অত্যন্ত খারাপ পরিস্থিতি। আমাদের ধরনা প্রতিবাদে অনেক মানুষ সাহায্য করেছেন। এখানে সকলে যা দিয়েছেন আমাদের সেটা জমে রয়েছে। আমরা আবেদন করব আরও মানুষ যদি আমাদের কাছে সাহায্য পাঠান। সেটা এখান থেকে দিয়ে বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণশিবির গড়তে চাই আমরা। বন্যা দুর্গত এলাকায় অভয়া ক্লিনিক গড়তে চাই।’
আজ আরজি কর হাসপাতালে যান নয়া কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। এই হাসপাতালে এসে তিনি নিরাপত্তার দিকগুলি খতিয়ে দেখেন। সুপ্রিম কোর্ট কড়া নিরাপত্তা দিতে বলেছে। আর জুনিয়র ডাক্তারদেরও দাবি তাই। এই কারণে আরজি কর হাসপাতালে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেন নগরপাল। অন্যান্য হাসপাতালেও একইরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এখন গ্রামবাংলার পরিস্থিতি ভয়াবহ। তাই তাঁদের চিকিৎসার স্বার্থে কাজে ফিরতে আহ্বান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন তিনি জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন।