চ্যাংদোলা বিতর্কে আগেই শুভেন্দু অধিকারীকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। বৃহস্পতিবার তিনি ঘোষণা করলেন, দলের থেকে জাত তাঁর কাছে বড়। একই সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলায় ঢুকলে শুভেন্দু অধিকারীকে ঘেরাও করে রাখার হুঁশিয়ারিও দিলেন তিনি। ফুৎকারে ওড়ালেন কৌস্তুভ বাগচীর ‘বাংলায় গুজরাতের পুনরাবৃত্তি হবে’ মন্তব্যকে।
বৃহস্পতিবার বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হুমায়ুন বলেন, ‘গোটা মুসলিম সমাজকে এভাবে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করা বন্ধ না করলে, বা যে কথা বলেছে মঙ্গলবার সেই কথা যদি প্রত্যাহার না করে মুর্শিদাবাদে ওনাকে পাঠিয়ে দেন, আগে থেকে যেন আপনাদের জানিয়ে দেয় কখন যাচ্ছেন, তার পর আমি আমার ভূমিকা দেখাব। ঘিরে রেখে দেব। ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করলে তবে ছাড়ব। হিম্মত থাকলে ফিরুক না। উনি বলছে তো ওনার কেশাগ্র স্পর্শ করলে এই করব, ওই করব। আগে একটা বিধায়ককে চ্যাংদোলা করে দেখান না। কত হিম্মত দেখব।’
এর পরই ভরতপুরের বিধায়ক ঘোষণা করেন, ‘আমার জাতিকে আক্রমণ করবে আমি বলব না? আমার কাছে আগে দল না, আগে আমার জাতি। আপনি লিখে নিন, আমি অত পরোয়া করি না। আমার জাতিকে আক্রমণ করবে আর আমি শুভেন্দুকে ছেড়ে দেব? কোনও মতেই ছাড়ব না। প্রত্যাহার করতে হবে, নইলে মুর্শিদাবাদে যেতে দিন। দেখাব মুর্শিদাবাদে হুমায়ুন কবির স্পটে না থেকেও শুভেন্দু অধিকারীর কী অবস্থা হয়।’
মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, যে ভাবে শংকর ও মনোজকে বিধানসভা থেকে বার করেছে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের মুসলমান বিধায়কদেরও সেভাবে চ্যাংদোলা করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলব।
শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে বুধবার সকালে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আপনার এখনও এত হিম্মত হয়নি যে আরনি বিধানসভার থেকে মুসলিম বিধায়কদের বের করে চ্যাংদোলা করে রাস্তায় ফেলবেন। আমি হুমায়ুন কবির একজন মুসলিম বিধায়ক হিসাবে চ্যালেঞ্জ করছি আপনাকে। আপনি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই কথা প্রত্যাহার না করলে এই ৪২ জন বিধায়ক বিধানসভায় আপনার ঘরের সামনে আমরা বুঝে নেব।’
হুমায়ুনকে পালটা চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার সোশ্যাল সাইটে বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী লেখেন, ‘এক জিহাদি, ৪২ জন জিহাদি সহ, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সনাতনের সেবক শ্রী শুভেন্দু অধিকারীকে বিধানসভায় বুঝে নেওয়ার কথা বলেছেন। এসব বালখিল্য কথাবার্তা না-বলে পাকিস্তান বা বাংলাদেশে জমি, বাড়ি দেখে রাখুন। ২০২৬ এর পর আপনাদের সকলের কাজে লাগবে। আর রইলো শুভেন্দু বাবুর কথা, হিম্মত থাকলে ছুঁয়ে দেখুন, বাংলায় গুজরাটের পুনরাবৃত্তি হবে।’