নগরায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চারিদিকে বাড়ছে কংক্রিটের জঙ্গল। জলাভূমি বুঝিয়ে এবং গাছপালা কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল। তারফলে কমছে সবুজ। সেই আবহে স্বস্তির কথা শোনাল ইন্ডিয়ান স্টেট অফ ফরেস্ট রিপোর্ট (আইএসএফআর)। সম্প্রতি আইএসএফআরের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গত দু'বছরে কলকাতায় সবুজ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও অন্যান্য বড় বড় শহরগুলির তুলনায় তা অনেকটাই কম বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
আরও পড়ুন: আমফানের জেরে দ্রুত রং বদলাচ্ছে ম্যানগ্রোভ-সহ সুন্দরবনের গাছ, চিন্তিত বন দফতর
আইএসএফআরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কলকাতায় সবুজ বেড়েছে।আইএসএফআরের ২০২৩ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় গত দু'বছরে বনাঞ্চল বৃদ্ধির পরিমাণ হল ০.২৯ বর্গ কিলোমিটার। এই দুবছরে কলকাতার বনাঞ্চল ১.৭৭ বর্গ কিলোমিটার থেকে বেড়ে হয়েছে ২.০৬ বর্গ কিলোমিটার। শতাংশের হিসেবে তা হল ০.৯ শতাংশ থেকে ১.১ শতাংশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় এই পরিমাণ বনভূমি থাকলেও দিল্লিতে তার পরিমাণ হল ১৯৫.৩ বর্গ কিমি, যা মহানগরগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তবে চেন্নাইয়ে এই দুই বছরের সময়ের মধ্যে ২.৬৪ বর্গ কিলোমিটার কমেছে।
সাধারণত, রাস্তার ধারে, ইউটিলিটি করিডোরে, সবুজ স্থানে, সুরক্ষিত এলাকায়, জলাশয় প্রভৃতি এলাকায় গাছের ওপর ভিত্তি করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। শহুরে অঞ্চলে বনভূমি সাধারণত গরমে তাপমাত্রা কমানো, ঘূর্ণিঝড়ের গতি কমিয়ে দেওয়া এবং বায়ুর গুণমান উন্নত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া, শহরের নাগরিকদের এই বনাঞ্চল এলাকায় হাঁটা এবং সাইকেল চালিয়ে, শরীরচর্চার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থের উন্নতি হয়ে থাকে। এছাড়াও, জীববৈচিত্র্যকেও বাড়িয়ে তোলে সবুজ। বিশেষ করে যখন বড় কোনও গাছ থাকে তখন সেটি গুরুত্বপূর্ণ বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল হয়ে ওঠে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে শহুরে বনাঞ্চলের। প্রসঙ্গত, সবুজ বৃদ্ধির জন্য কলকাতা পুরসভার তরফে গত কয়েক বছরে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। পরিবেশ কর্মীদের অনেকেই পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। এদিকে, আহমেদাবাদেও বনভূমি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে বনভূমি ৯.৪১ বর্গ কিমি থেকে বেড়ে ১৪.৮৯ বর্গ কিলোমিটার হয়েছে, যা ৫.৪৮ বর্গ কিলোমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বেঙ্গালুরুতে ০.৫৯ বর্গ কিলোমিটার বেড়েছে। তবে ব্যক্তিগত বা সরকারি মালিকানাধীন মিলিয়ে এই বনাঞ্চল বৃদ্ধির রিপোর্ট পেশ হয়েছে।