তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ‘তোলাবাজি’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল কলকাতা পুরসভার ওএসডি কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তিনি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দফতরে কর্মরত। অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিট অফিসের এক কর্মী অয়ন ঘোষদস্তিদার শেক্সপিয়র সরণি থানায় এই নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ডিসি (সাউথ)–এর কাছেও অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জানতে পারেন। তারপরই নেওয়া হয় উপযুক্ত ব্যবস্থা। আর এই ঘটনা নিয়ে এবার বিস্ফোরক তথ্য দিলেন সদ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ পদত্যাগ করা ব্যক্তিত্ব জহর সরকার।
আজ, শনিবার এই বিষয়টি নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কিছু কথা পোস্ট করেন জহর সরকার। আর তারপরই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য–রাজনীতিতে। এমনকী অস্বস্তি তৈরি হয় দলের অন্দরে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে অভিষেকের নাম অপব্যবহার কোন ক্ষেত্রে করা হয়েছে সেটা এখনও স্পষ্ট হয়নি। নিজেকে অভিষেক ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে বহু মানুষের থেকে মোটা টাকা আদায় করেছে বলে অভিযোগ। সেই তালিকায় যেমন রয়েছেন সাধারণ নাগরিক থেকে একাধিক ব্যবসায়ী, তেমনই আছেন সরকারি অফিসাররাও। অয়ন অভিযোগপত্রে দাবি করেন, সম্প্রতি ক্যামাক স্ট্রিটে খবর আসে এভাবে কালীচরণ কোটি কোটি টাকা তুলেছে।
আরও পড়ুন: আবার নাম জড়ালো সিভিক ভলান্টিয়ারের, আদিবাসী বধূর শ্লীলতাহানি করে গ্রেফতার গুণধর
এভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে দুর্নীতি করছেন অনেকে সে কথা বারবার বলেছেন জহর সরকার। তখন তা পছন্দ হয়নি দলের বলে দাবি করেছেন জহর। তাতেই অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। এই কথা তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন। এই খবর সামনে আসতেই আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি। তবে এই বিষয়ে মেয়রকে জিজ্ঞাসা করা হলে ফিরহাদ বলেন, ‘আমি এই ব্যাপারে কিছু জানতাম না। সংবাদমাধ্যম থেকেই জানতে পেরেছি। এমন কোনও অভিযোগ থাকলে আগে আমাকেই তো বলা যেত। আমি বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করতাম। এমন অভিযোগের কথা আমি আগে কোনওদিন শুনিনি। তবে অভিযোগ যদি ভিত্তিহীন হয়, তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কেমন করে সরাব?’
এবার এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন জহর সরকার। আজ এক্স হ্যান্ডেলে জহরবাবু লেখেন, ‘আমি যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতাম, তৃণমূল কংগ্রেস তখন তা পছন্দ করত না। এখন তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করছেন, ফিরহাদ হাকিমের ঘনিষ্ঠ তাঁর নাম অপব্যবহার করে দুর্নীতি করছে। মেয়র সেটা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। দয়া করে দলকে পরিষ্কার করুন।’ এই কথাগুলিই এখন বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ কালীচরণের মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস পরীক্ষা করে দেখবে।