আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সম্প্রতি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য পদ ছেড়েছিলেন। তারপর রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়ে দেন তিনি। তাঁকে ধরে রাখা যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনের পরও তাঁকে আটকে রাখা যায়নি। এবার আজ, বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে স্থায়ী ইস্তফার খবর জানালেন জহর সরকার। আর যা লিখলেন তাতে এখন রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড়।
মুখ্যমন্ত্রী কেন পুরনো মেজাজে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে যাচ্ছেন না সে প্রশ্ন আগে তুলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী যখন গেলেন তখন অবশ্য বাহবা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেসব এখন অতীত। এখন তিনি ‘মুক্ত জহর’। আর সে কথাটাই আজ তুলে ধরেছেন জহর সরকার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে। আজ, বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে জহর সরকার লেখেন, ‘নিয়ম মেনে আমার ইস্তফাপত্র গ্রহণ করার জন্য রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানাই। সাংসদ ও সংসদের কর্মকর্তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। যাঁরা আমাকে সাহায্য করেছেন। অনেক কিছু শিখিয়েছেন।’
জহর সরকারকে তৃণমূল কংগ্রেসে নিয়ে এসেছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তিনিও দলের অন্দরে এখন বিদ্রোহী। সদ্য পদ ছেড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রের সম্পাদকের। আর এই আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ লিখেছেন, ‘এখন আমি মুক্ত এবং একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে অন্যদের মতো প্রতিবাদের পূর্ণ স্বাধীনতা আমারও থাকবে।’ অর্থাৎ এবার পাকাপাকিভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করলেন তিনি। জহর সরকারের ইস্তফার কারণে রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যা ১৩ থেকে কমে ১২ হল।
আরও পড়ুন: ‘স্বাস্থ্যভবনে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে’, নথি তুলে একগুচ্ছ অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু
রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন জহর সরকার। বৃহস্পতিবার সরকারিভাবে তাঁর ইস্তফা গৃহীত হল। এই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমিও সমব্যাথী। তোমাদের দাবিকে আমিও সমর্থন করি। কিন্তু মানুষের স্বার্থে কাজে ফিরে আসা উচিত।’ আজও বানভাসী পরিস্থিতি দেখে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরে আসতে আহ্বান করেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার উঠে যাচ্ছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ওই পদক্ষেপের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাও করেছিলেন জহর সরকার।