করোনার জেরে যখন রাজ্যে লকডাউন চলছিল তখন বিনামূল্যে সবাইকে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর তা রাজ্যবাসীর জন্য মেয়াদ বাড়িয়ে দেন। এই দেখে কেন্দ্রীয় সরকারও একই পথে হেঁটেছিল। কিন্তু পরে। হ্যাঁ, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবার দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে ফের গরীব মানুষের কথা ভাবলেন তাঁর দলের নেতা। পুজোর কটা দিন মুখে মাংস–ভাত তুলে দেবেন তাঁরা। দক্ষিণ কলকাতায় এবার ‘মমতাময়ীর হেঁসেল’ সেই কাজটা করবে। পুজোর পাঁচদিন বিনা পয়সায় মাংস–ভাত খাওয়ানোর উদ্যোগ তৃণমূল কাউন্সিলরের। পুজোর সময় পঞ্চমী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রত্যেকদিন কসবা অঞ্চলের এক হাজার গরীব মানুষকে বিনা পয়সায় মাংস–ভাত খাওয়ানো হবে। রোজ আগ্রহী মানুষের কাছে কুপন বিলি করা হবে। দুপুর ১২টা থেকে শুরু হবে বিতরণ।
করোনা আবহেই হচ্ছে রাজ্যে দুর্গাপুজো। তাই আনন্দের কটা দিন ভাল কাটুক গরীব–গুর্ব মানুষের। তাই চান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর এই চাওয়াকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যাবতীয় বিতর্ক শুরু হয়েছে হেঁসেলের স্লোগান নিয়ে। কারণ সম্প্রতি লকডাউন পর্বে যাদবপুরে একটি শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। যার স্লোগান—‘কেউ খাবে কেউ খাবে না। তা হবে না, তা হবে না।’ মমতাময়ীর হেঁসেলেও হুবহু একই স্লোগান। আর বিতর্ক এখানেই।
মমতাময়ীর হেঁসেল যার মস্তিষ্ক প্রসূত সেই কাউন্সিলর ও বোরো চেয়ারম্যান সুশান্ত কুমার ঘোষের দাবি, ‘এই স্লোগান কখনই সিপিএমের নয়। ২০০৯ সালে জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ির সামনে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করে তৃণমূল। তখন আমাদের নেত্রীই এই স্লোগান তুলে ধরেন। সুতরাং এই স্লোগান ব্যবহার করতে অসুবিধা কোথায়? ব্যবহার করতেই পারি’।
অন্যদিকে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, তৃণমূল সাধারণত বিজেপি কংগ্রেসের থেকে নকল করে। এবার আমাদের নকল করছে। এই স্লোগান কখনই তৃণমূলের নয়। এটা আগেও বহু আন্দোলনে ব্যবহার হয়েছে। পুজোয় এমনিতেই গরিব মানুষকে ক্লাবগুলি খাওয়ায়। এটাও নিজেদের প্রচারে ব্যবহার করছে তৃণমূল। তবে এই স্লোগান বিতর্ক থাকলেও তৃণমূল কংগ্রেসের স্বেচ্ছাসেবকরা তৈরি করছে বিশাল হেঁসেল। এখন এটাই খবর।