বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এলেন বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। গত বছর দল ছেড়েছেন আরেক সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তিনিও আর বিজেপিতে নেই। সরকারিভাবে অর্জুন তাঁর সাংসদ পদ না ছাড়লেও বিজেপির সঙ্গে তিনি নেই। ফলে রাজ্যের বিজেপি সাংসদের সংখ্যা ১৮ থেকে কমে দাঁড়াল ১৬। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে বিজেপির অন্দরে ভাঙন ধরতে শুরু করেছে।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন অর্জুন সিং। বিজেপির টিকিটেই বারাকপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন তিনি। জিতেও ছিলেন। এরপর তিন বছর দুই মাস থাকার পর ফের তৃণমূলে ফিরে এলেন তিনি। এর মধ্যে বিজেপিতে অনেক সময়ই সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছেন অর্জুন। বেশ কয়েক মাস ধরে জুট মিলগুলিকে বাঁচানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে অর্জুনের সংঘাত শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত তা চরমে ওঠে। শেষ পর্যন্ত বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অর্জুন। পুরনো দলে ফিরে বিজেপিকে বিঁধলেন তিনি। তাঁর মতে, বাংলায় বিজেপি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মাধ্যমে রাজনীতি করছে। বিজেপিতে থেকে তিনি যে কোনও কাজ করতে পারছিলেন না, তা তাঁর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। অর্জুন বিজেপি ছেড়ে যাওয়ায় সাংসদ সংখ্যার বিচারে বিজেপির তো ক্ষতি হল, সেই সাংগঠনিকভাবে বিজেপি কতটা বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে লড়াই করতে পারবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল। অর্জুন ইতিমধ্যে তাঁর সাংসদ পদ ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলে রেখেছেন। তবে তিনি একটি শর্ত দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের দুই সাংসদ যারা বিজেপির হয়ে কাজ করছেন, তাঁরা যদি সাংসদ পদ ছেড়ে দেন, তাহলে তিনিও তাঁর সাংসদ পদ ছেড়ে দেবেন।
এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। বাবুল তৃণমূলে যোগদানের পর সাংসদ পদ ছেড়েও দেন। পরে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জয়লাভ করেন বাবুল। এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্র থেকে সুনীল মণ্ডল তৃণমূলের টিকিটে জিতলেও গত বিধানসভা ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন। পরে তিনিও ফের তৃণমূলেই ফিরে আসেন। অর্জুন কাণ্ডের পর ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সংসদীয় ক্ষেত্রে বিজেপি যে কিছুটা ধাক্কা খেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।