পশ্চিমবঙ্গে কবে থেকে চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন? আজ, বৃহস্পতিবারই রেল–রাজ্য চূড়ান্ত বৈঠক শেষে মিলতে পারে এই প্রশ্নের উত্তর। সোমবার, বুধবারের পর এদিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ নবান্নে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক সারবে রাজ্য সরকার। তার পরই কবে থেকে এবং কীভাবে রাজ্যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা ফের শুরু হবে তা জানানো হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে মেট্রো রেলের মতো ই–টিকিট ব্যবস্থা চালু করা হবে কি? সেই প্রশ্নের উত্তরও মিলতে পারে আজ।
এর আগে বুধবার রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, পরিবহণ সচিব ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেন পূর্ব রেল ও দক্ষিণ–পূর্ব রেলের আধিকারিক ও আরপিএফ ও রাজ্য পুলিশের আধিকারিকরা। করোনা পরিস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে ট্রেন চালানো সম্ভব আর তার জন্য কীরকম স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) তৈরি করতে হবে তা নিয়ে এদিন আলোচনা হয়েছে। মূলত একটি রূপরেখা তৈরি করার চেষ্টা করা হয়।
ইতিমধ্যে রেলকে সকাল ও বিকেলের অফিস টাইমে হাওড়া ও শিয়ালদহ— এই দুটি স্টেশন মিলিয়ে ২০০–র বেশি ট্রেন চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য। আর পরিষেবার শুরুতে রেল একটি লোকাল ট্রেনে ৬০০ জন যাত্রী পরিবহণ করাতে চায়। সে ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট রুটের ট্রেনে এককালীন যাত্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার যাত্রী চড়তে পারবেন। অফিস টাইমে এত সংখ্যক যাত্রীকে পরিষেবা দেওয়া আপাতভাবে যথেষ্ট মনে হলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে।
হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে ইতিমধ্যে যাত্রীদের ঢোকা এবং বেরোনোর নির্দিষ্ট জায়গা করে দেওয়া রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের ছোট–বড় অন্য স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের ঢোকা এবং বেরোনো নিয়ে কী কী নির্দেশিকা থাকা দরকার বা কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা বৃহস্পতিবারের বৈঠকে রাজ্যকে জানাতে চলেছে রেল। অফিস টাইম ছাড়া অন্য সময়ে কোন কোন রুটে কটি ট্রেন চালানো হবে তার তালিকাও তৈরি করছে রেল।
করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে রেলযাত্রীদের সংখ্যা বা ভিড় নিয়ন্ত্রণ বিশাল বড় একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ, ট্রেন চালু শুরু হলে সেদিকেই ঝুঁকবে বেশিরভাগ মানুষ। সেই অসংখ্য যাত্রী থেকে একটি ট্রেনে ৬০০ জন যাত্রীকে উঠতে দেওয়া— এ সব কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে? জানা গিয়েছে, বুধবার এই প্রশ্ন রেলকে ছুড়ে দেয় রাজ্য। এ ক্ষেত্রে রেলপুলিশের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের সাহায্য চেয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, যাত্রীরা মাস্ক পরছেন কিনা, শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কিনা— এ সব রেলের হাতে না থাকলেও যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং এবং স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা রেলকে আগেই করতে বলেছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, কিছু স্টেশন বাদ রেখে গ্যালপিং ট্রেন চালানোর কথা ভাবছে রেল। বিনা টিকিটে রেলযাত্রা ঠেকাতে স্টেশনে স্টেশনে টিকিট পরীক্ষকের সংখ্যাও বাড়তে পারে। স্টেশনগুলি হকারমুক্ত করার কথাও ভাবছেন রেল কর্তৃপক্ষ।