গড়িয়াহাট জোড়া খুন কাণ্ডে ভিকি হালদার পুলিশের জালে ধরা পড়তেই বেরিয়ে এলো নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভিকি ছদ্মবেশে এখান থেকে মুম্বই পৌঁছয়। সেখানেই গা–ঢাকা দিয়ে ছিল সে। খুন করার পর সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়িচালকের আঙুল থেকে সোনার আংটি খুলে নিয়েছিল ভিকি। সেগুলি এক বন্ধুর কাছে জমা রেখে নিয়েছিল ৫ হাজার টাকা। এছাড়া তাঁদের মানিব্যাগ হাতিয়েও বেশ কিছু টাকা হাতে এসেছিল ভিকির। সেই টাকা নিয়েই মু্ম্বই পাড়ি দেয় এই মূল অভিযুক্ত।
দফায় দফায় জেরায় তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, কর্পোরেট কর্তা ও গাড়িচালককে খুন করে এক আত্মীয়ের কাছে গিয়েছিল ভিকি। কিন্তু সেখানে গিয়ে নিজের ফোন খুলেছিল ভিকি। তখনই ট্র্যাক হয়ে যায় ভিকির গতিবিধি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তারপর মুম্বই রওনা দেন গোয়েন্দারা। লোকেশন অনুযায়ী যা মিলছিল তা হল, নির্মীয়মাণ বহুতল। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় ভিকি ও তার সহযোগীকে।
পুলিশ কী করে জানতে পারল মুম্বইয়ের কথা? সূত্রের খবর, প্রথমে ভিকির এলাকায় যখন তল্লাশি চালানো হচ্ছিল তখন ওখানকার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন অফিসাররা। সেখান থেকে তাঁরা জানতে পারেন এই শ্রমিকদের বাণিজ্যনগরীতে যাওয়ার চল আছে। তখন ভিকির খোঁজ পেতে রেলের কাছ থেকে ক’দিনের যাত্রী তালিকা চায় পুলিশ। সেখানেই উঠে আসে ভিকির নাম। তারপর চলছিল লোকেশন ট্র্যাকের কাজ। সেখানে পাওয়া যায় বাণিজ্যগরীর সিগন্যাল। এভাবেই ভিকির গতিবিধি জেনে ফেলেছিল পুলিশ।
কিভাবে গিয়েছিল মুম্বই ভিকি? পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৮ অক্টোবর হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠেছিল ভিকি ও তার বন্ধু। কিন্তু টিকিট কাটা হয় পরেশনাথ পর্যন্ত। অথচ সেখানে না নেমে সোজা চলে যায় মুম্বই। পুলিশ যাতে ট্র্যাক করতে না পারে তাই এই ছক করা হয়েছিল। মুম্বইতে গিয়ে একটি সূত্রে কালাচৌকি এলাকার একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ জুটিয়ে ফেলেছিল সে। কিন্তু এত ছক করেও শেষরক্ষা হল না।
গ্রেফতার করার পর তাদের কলকাতায় আনা হচ্ছে। কলকাতায় নিয়ে এসে ভিকিকে জেরা করলে খুনের আসল রহস্য মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভিকি হিন্দি ও ইংরেজি ভাল বলতে পারে বলেই সেখানে কাজ জোটাতে সমস্যা হয়নি। সেখান থেকে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। নিরাপত্তারক্ষীর কাজ শুধু সময় কাটানোর জন্য করছিল ভিকি।