বাংলায় কন্যাসন্তান জন্মের হার নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এসেছে। এই তথ্য অনুযায়ী, বাংলার অর্ধেকের বেশি জেলায় কন্যাসন্তানের হার গত এক বছরে উদ্বেগজনকভাবে কমে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। জন্ম নথিভুক্তকরণের তথ্য বা সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (সিআরএস) অনুযায়ী, গত এক বছরে বাংলার কমপক্ষে ১৩টি জেলায় পুত্র সন্তানের অনুপাতে কন্যা সন্তানের জন্ম কমেছে।
আরও পড়ুন: প্রসবের পর বাদ দেওয়া হল মহিলার জরায়ু, মারাত্মক অভিযোগ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে
এই রিপোর্টে অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ১৩টি জেলায় প্রতি ১ হাজার পুত্রসন্তান জন্মের অনুপাতে কন্যাসন্তানে জন্মের হার কমেছে। আর কন্যা সন্তানের জন্মের হার ৯৫০-এরও কম। সিআরএস পোর্টাল অনুযায়ী, এই জেলাগুলি হল- দর্জিলিং, মালদা, বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া, হাওড়া, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এরমধ্যে সবচেয়ে কন্যা সন্তানের জন্মের হার কমেছে দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলায়। এগুলি হল- বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া। এখানে ১ হাজার পুত্র সন্তান পিছু কন্যা সন্তানের জন্মের হার হল যথাক্রমে ৯৩১ ৯২৮ এবং ৯১৫ জন।
কলকাতাতেও কন্যা সন্তানের জন্মের হার কমে ৯৪২ হয়েছে। আর পার্শ্ববর্তী ২ জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়াতে কন্যা সন্তানের জন্মের হার কমে হয়েছে ৯৩৯ এবং ৯৪৯ জন। কন্যা সন্তানের জন্মের হার কমে যাওয়ায় এই ১৩ জেলায় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে লাল সঙ্কেত ব্যবহার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, গোটা বাংলায় ১ হাজার পুত্র পিছু কন্যা সন্তানের জন্মের হার ৯৪৬ জন।
তবে কেন কন্যা সন্তানের হার কমেছে?
এপ্রসঙ্গে এক আধিকারিক জানান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম জেলাগুলি সীমান্তবর্তী হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ভিন রাজ্যে গিয়ে অনেকে লিঙ্গ নির্ধারণ করিয়ে আসছেন। তাছাড়া, বিভিন্ন ধরনের অনলাইন লিঙ্গ নির্ধারণ কিটের ব্যবহার করেছেন অনেক দম্পতি। আবার রাজ্যজুড়ে থাকা ৪০টি জেনেটিক ল্যাব নিয়ম মেনে কাজ করছে কি না তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এনিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে রাজ্য পরিবার কল্যাণের এক জনিয়েছেন। তিনি জানান, আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লিঙ্গ নির্ধারণের বিষয়টি ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।