‘তৃণমূলের পা ধর গিয়ে, মমতার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) পা ধর, একটা বডি লোপাট করে শান্তি হয়নি?’- কাঁটাপুকুর মর্গের সামনে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে এমনই মন্তব্য করলেন বামনেত্রী দীপ্সিতা ধর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং খুনের যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বালিকার দেহ আজ বিকেলে কলকাতার কাঁটাপুকুর মর্গে নিয়ে আসা হয়। সেইসময় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। ছিলেন দীপ্সিতাও। বিক্ষোভের মধ্যেই তাঁকে টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দিতে থাকেন পুলিশকর্মীরা। সেইসময় পুলিশকে আক্রমণ শানিয়ে দীপ্সিতা বলেন, ‘তৃণমূলের পা ধর গিয়ে।' সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাওয়াই চটি, উর্দির লাঠি, ভয় পায় না, আমার মাটি।’
RG করের তরুণীর দেহ লোপাটের চেষ্টা পুলিশের, দাবি
দীপ্সিতা দাবি করেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সময় তড়িঘড়ি সৎকার করে তরুণী চিকিৎসকের দেহ লোপাট করে দিয়েছিল পুলিশ। আরজি করের ঘটনার মতো জয়নগর কাণ্ডেও পুলিশ দেহ লোপাটের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন দীপ্সিতা। বামনেত্রী প্রশ্ন তোলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার কি ধর্ষকদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে?
জয়নগরে ঠিক কী ঘটেছে?
শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের একটি জলাভূমি থেকে চতুর্থ শ্রেণির এক বালিকার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনাকে ঘিরে শনিবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। অভিযোগ উঠেছে যে তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের তরফে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও জনতার রোষের মুখে পড়তে হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের ক্যাম্পে।
আরও পড়ুন: প্রতিবাদীদের সাথে সাংবাদিকদেরও পেটাল ধর্ষণের প্রমাণ লোপাটে অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশ
পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, জ্বলল আগুন
পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, মেয়েকে যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তা নিয়ে শুক্রবার রাতেই পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ জানাতে যান তাঁরা। তাঁদের কথায় প্রাথমিকভাবে কোনও গুরুত্বই দেয়নি পুলিশ। করা হয় টালবাহানা। যদি তখনই পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে ব্যবস্থা নিত, তাহলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে বাঁচানো যেত বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর সেই ক্ষোভের আঁচে জ্বলতে থাকে জয়নগর।
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের পর বিনীত গোয়েলের ‘কনফিডেন্স’ জয়নগর কাণ্ডে বারুইপুরের SP-র মুখে
তারইমধ্যে শনিবার বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি দাবি করেছেন যে ভোরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ১৯ বছরের ওই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়। তারপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন যে নিয়ম মেনে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করেছে।