বাংলার বিভিন্ন জেলায় নদী ভাঙনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। ক্রমাগত ভাঙনে একের পর এক বাড়ি, জমি তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। ভিটে বাড়ি, চাষের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই। তাছাড়া, নদীর বাঁধ ভেঙে প্রতিবছর প্লাবিত হচ্ছে বহু গ্রাম। বিশেষ বর্ষা আসলেই ভাঙনের সমস্যা বেশি দেখা দেয় মালদা, মুর্শিদাবাদে। সেই সমস্যা সমাধানে বিশেষ পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এর জন্য মাস্টারপ্ল্যানের উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিধানসভায় একথা জানালেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। একইসঙ্গে ভাঙন রুখতে আর্থিক সাহায্য না পাওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন সেচমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ভারত–ভুটান নদী কমিশন নিয়ে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলল তৃণমূল, বিধানসভায় সরব সুমন
সাধারণত এই দুটি জেলায় প্রতিবছরই নদী ভাঙনের ফলে প্রচুর মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারপরেও স্থায়ী সমাধান হয়নি। শুধু তাই নয়, রাজ্যের বিধায়ক, মন্ত্রীরা বিভিন্ন সময়ে এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে এসেছেন। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে এ নিয়ে রাজ্য সরকারের মাথাব্যথা বহুদিনের। এবার পাকাপাকিভাবে ভাঙন রুখতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। সেই বিশেষ পরিকল্পনার কথায় এদিন বিধানসভায় জানান মন্ত্রী। বিজেপি বিধায়ক গোপাল সাহা বুধবার নদী ভাঙন নিয়ে প্রশ্ন করেন। তার উত্তরে তিনি একথা জানান। একইসঙ্গে তিনি নদী ভাঙনে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। মন্ত্রী জানান,
নদীবাঁধ ভাঙনের ফলে বিভিন্ন জেলার হাজার মানুষ জমি, বাড়ি, স্কুল হারাচ্ছেন। তা দেখার পরেও কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মালদা এবং মুর্শিদাবাদে ভাঙন রুখতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছেন। তখন বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সরকারকে বলুন টাকা দিতে।’
যদিও বিশেষ পরিকল্পনা কী বা কবে বাস্তবায়িত হবে? সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি মন্ত্রী। এর আগেও রাজ্যের তৎকালীন সেই সেচ মন্ত্রীরা নদী ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিলেন। উল্লেখ্য, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়েও দীর্ঘ দিন কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের টানাপড়েন চলছে। এনিয়ে লোকসভায় একাধিকবার সরব হয়েছেন ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী (দেব)। পরে রাজ্য সরকার নিজেদের তহবিল থেকে এই মাস্টারপ্ল্যান করার করার কথা জানায়। সেক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ উঠেছিল।