মিষ্টি সম্পর্ক তৈরি করতে চান বলে বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের এই বার্তা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি। তারপরই দেখা গেল কথা অনুযায়ী কাজ। বিধানসভায় গিয়ে ৬ জন বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে রাজভবনে ফিরলেন তিনি। এবার স্থায়ী উপাচার্য পেতে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের তালিকায় সিলমোহর দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আর তারপরই সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বাধীন ‘সার্চ–অ্যান্ড–সিলেকশন’ কমিটিকে ধন্যবাদ জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসকেও ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।
উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার ৬জন উপাচার্যের নিয়োগপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হচ্ছে নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তী। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শংকরকুমার নাথ, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হচ্ছেন রূপকুমার বর্মণ। আর রানি রাসমণি গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পদে বসছেন অমিয়কুমার পান্ডা, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হচ্ছেন কল্লোল পাল এবং সিধো কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হচ্ছেন পবিত্রকুমার চক্রবর্তী। রাজ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল। উপাচার্য নিয়োগে রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার থাকলেও চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে হয় আচার্যকে। সেখানে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এবার তা কেটে গেল।
আরও পড়ুন: দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের কাজ খতিয়ে দেখতে সফর মুখ্যমন্ত্রীর, কপ্টারে করে কবে যাচ্ছেন?
সমস্যাটা তৈরি হয় রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁরা সবাই অস্থায়ী উপাচার্য। তখন স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবি তোলে রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে যান রাজ্যপাল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে মামলা গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। আর সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খান রাজ্যপাল। বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার নির্দেশ, উপাচার্যদের নাম বাছাই করে তালিকা তৈরি করবে নির্দিষ্ট কমিটি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সেই তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে। রাজ্যপালের যদি কোনও নামে আপত্তি থাকলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে পারেন। বৈঠক করতে পারেন। সেই মতো রাজভবনে ফাইল পৌঁছে যায়। আর তাতে সই করে দেন সিভি আনন্দ বোস।
এবার এই ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ জন স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হবেন। সূত্রের খবর, ৩৪ জন উপাচার্যের নাম মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে রাজভবনে গিয়েছিল। একসপ্তাহের মধ্যে সেই নামগুলিতে সিলমোহর দিয়ে পাঠানোর কথা ছিল রাজভবনের। তার মধ্যে ৬ জনের নামে সিলমোহর পড়ল। বাকিগুলিতেও পড়ে যাবে বলে আশা রাখছে রাজ্য সরকার। তবে এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন। তিনি লেখেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের দেখানো পথে রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অবশেষে স্থায়ী উপাচার্য পেতে চলেছে। আমাদের গোটা হৃদয় থেকে ধন্যবাদ জানাই সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত মহাশয়কে এই প্যানেল প্রস্তাব করার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী এবং আচার্যকেও ধন্যবাদ জানাই।’