রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন নৃত্যশিল্পী? এই প্রশ্ন এখন রাজ্য–রাজনীতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে আজ মঙ্গলবার এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন ওই নৃত্যশিল্পী। আজ বিবৃতি দিয়ে নৃত্যশিল্পী দাবি করেন, মামলা প্রত্যাহার করতে চাননি তিনি। তবে কিছু কারণে বিষয়টি নিয়ে আর এগোতে চান না। এ নিয়ে তাঁর মন্তব্যের ‘ভুল’ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নৃত্যশিল্পী নয়াদিল্লির তাজ হোটেলে তাঁকে ধর্ষণ করার অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু সেই অভিযোগ নিয়ে তিনি এই মুহূর্তে আর এগোতে চান না। তাঁর দাবি, নিজের শারীরিক অবস্থা এবং বিদেশে অন্য একটি ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আইনি লড়াইয়ে এখন তিনি ব্যস্ত।
এদিকে নয়াদিল্লির তাজ হোটেলে কী ঘটেছিল? সেই ভিডিয়ো ফাঁস করে দেবেন বলে রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। এবার ওই ঘটনা নিয়ে অভিযোগ যে মহিলা অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁর ‘প্রেস বিবৃতি’ প্রকাশ করলেন কুণাল। সেখানে নির্যাতিতা মহিলা দাবি করেছেন, তিনি কখনওই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাননি। বিশেষ পরিস্থিতিতে এখন বিষয়টি আর এগিয়ে নিয়ে যেতে চান না তিনি। অভিযোগকারিণী দাবি করেছেন, তাঁকে উদ্ধৃত করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক কর্তার মন্তব্য সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ে প্রকাশিত হয়। তাঁর মুখে বসানো সেই কথা মিথ্যা।
আরও পড়ুন: এবার হাওড়ার স্কুলে মিড–ডে মিলের খাবারে গিরগিটি, গড়বেতায় অসুস্থ ৩০ জন পড়ুয়া
অন্যদিকে কিছুদিন আগে নয়াদিল্লির পাঁচতারা হোটেলে নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে নবান্নে জমা পড়ে বিস্ফোরক রিপোর্ট। কলকাতা পুলিশ এই রিপোর্ট জমা করেছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ওই নৃত্যশিল্পী। তাঁর অভিযোগ, ২০২৩ সালের ৫ ও ৬ জুন একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে নয়াদিল্লি নিয়ে যান রাজ্যপাল। সেখানে তাঁকে একটি পাঁচতারা হোটেল রাখা হয়। রাজ্যপালের বেঙ্গালুরুর এক আত্মীয় সেই হোটেলের রুম বুক করেন। সেই হোটেলেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে কুণাল বলেন, ‘অভিযোগকারিণী নিজের বিবৃতি আমাকে পাঠিয়েছেন। আমি তাঁর অনুরোধ রক্ষা করে তা সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছি।’
এছাড়া নৃত্যশিল্পীর ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করেন ডিসি পদমর্যাদার এক অফিসারের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের টিম। ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের রিপোর্ট জমা পড়ে নবান্নে। রাজভবনের ভিতরই এক মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ আগেই ওঠে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তারপরই সামনে আসে নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণ করার ঘটনা। এবার অভিযোগকারিণী বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি আমেরিকার অন্যায় ও বিচারব্যবস্থার স্বৈরাচারের শিকার। সে দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং ভারত সরকারের কাছে বিষয়টি আটকে আছে। আমি একজন অসহায় ভারতীয় হিন্দু গৃহবধূ।’ আর কুণালের কথায়, ‘তিনি অভিযোগ প্রত্যাহার করেননি। আমেরিকায় কিছু জটিলতা আছে। সেক্ষেত্রে তিনি ভারত সরকারের সাহায্য চান। তাই এখন এই বিষয়টি নিয়ে এগোতে চান না।’