আবারও মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দকেই মান্যতা দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বাংলার আরও চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল। ওই চারজন স্থায়ী উপাচার্যদের মঙ্গলবার রাজভবনে ডেকে পাঠিয়ে নিয়োগপত্র দিলেন বোস। আগে ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্যের ক্ষেত্রেও মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দকেই সিলমোহর দিয়েছিলেন। তবে সবটাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। সুতরাং মিষ্টি সম্পর্ক গড়ে তুলতেই রাজ্যপাল এই পদক্ষেপ করলেন। আসলে পুরনো বন্ধুত্ব ফুলের মতো হয় বলে রাজভবনের বাসিন্দা নিজেই বলেছিলেন। সুতরাং আরও চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে মিলল ছাড়পত্র।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপেই নবান্ন–রাজভবনের জট কাটছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে রাজ্যের ৩৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে ফাইল পাঠানো হয়েছে রাজভবনে। ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নাম চূড়ান্ত করে রাজ্যপাল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কদিন আগেই। সেই তালিকায় এবার জুড়ল আরও চার বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। এবার কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে তপতী চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে জানে আলম, মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌরাংশু মুখোপাধ্যায় এবং হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য পদে নন্দিনী সাহুকে নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল। এঁরা সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম পছন্দ হিসাবে তালিকায় ছিলেন। রাজ্যের পাঠানো সেই তালিকা মেনেই নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে বাংলায় ফিরল মিতালি এক্সপ্রেস, পাঁচ মাস পর ওপার থেকে এপারে আসল
অন্যদিকে গত শুক্রবার রাজ্য সরকারের তালিকায় সিলমোহর দিয়ে ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের নাম চূড়ান্ত করেন রাজ্যপাল তথা আচার্য। সম্পর্কের ‘তিক্ততা’ কাটিয়ে সোমবার রাজভবন যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনের মধ্যে একঘণ্টা বৈঠক হয়। তার পর এবার আরও চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন সিভি আনন্দ বোস। সবমিলিয়ে বাংলার ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল। রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে কথা হয় বলে সূত্রের খবর।
এছাড়া এই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। রাজ্যপাল বনাম মুখ্যমন্ত্রীর দ্বৈরত দেখা দেয়। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে ধাক্কা খান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গত ৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে ‘সার্চ–কাম–সিলেকশন’ কমিটি তৈরি করে দেয়। সর্বোচ্চ আদালত বলেছিল, এই কমিটি প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের জন্য তিনটি নাম বাছাই করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। মুখ্যমন্ত্রী তিনজনের মধ্যে পছন্দের ভিত্তিতে একটি তালিকা তৈরি করবেন। সেই নামের তালিকা থেকেই একজনকে বেছে নেবেন রাজ্যপাল। তারপরই টনক নড়ে রাজ্যপালের। শুরু হয় নিয়োগ।