এবারের বিধানসভার অধিবেশনে তিন ফৌজদারি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নিয়ে আসবে রাজ্য সরকার। আর তা করার জন্য সাত সদস্যের কমিটি গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আর রাজ্যের এই কমিটি গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের থেকে রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যপাল। নতুন দণ্ড সংহিতা আইন নিয়ে আগেই আপত্তি তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে তিন ফৌজদারি আইন। মুম্বই থেকে কলকাতা ফিরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিন ফৌজদারি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নিয়ে আসবে রাজ্য সরকার।
এবার এই বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। রাজভবন সূত্রে খবর, কেন এই কমিটি গঠন করা হয়েছে? কমিটির কাজ কী হবে? তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি’ ও ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’ বাতিল করে দিয়ে দেশে গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’, ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’ আইন। এই তিন আইন পর্যালোচনা করার জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটির মাথায় আছেন প্রাক্তন বিচারপতি অসীম সরকার। এই কমিটির কাজ হল, তিন আইন খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট দেওয়া।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সব মামলার কেস ডায়েরি তলব কলকাতা হাইকোর্টের, পুলিশ কত সময় পেল?
এদিকে এই তিন আইন খতিয়ে দেখতেই সাত সদস্যের কমিটি গড়েছে রাজ্য সরকার। এই কমিটির মাথায় রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার রায়। আর রয়েছেন— আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং আইনজীবী সঞ্জয় বসু। রাজ্যপাল এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেওয়ায় সংঘাতের বাতাবরণ যে তৈরি হয়েছে তেমনই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সাংঘাত অব্যাহতই রয়েছে। এবার তাতে বাড়তি সংযোজন হল।
অন্যদিকে এই বিষয়টি নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন রাজ্যপাল। তা এখন সবার সামনে এসেছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস লিখেছেন, ‘দেশের আইন সংহিতা নিয়ে এভাবে পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। হঠাৎ করে তিন ফৌজদারি আইন খতিয়ে দেখার জন্য কেন কমিটি গঠন করা হল? বাংলা কখনও বেনানা রিপাবলিক নয়। এই বিষয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজ্য সরকার সময়মতো জবাব দিয়েছিল কি? দেশের মধ্যে আলাদা দেশ হয়ে উঠতে পারে না পশ্চিমবঙ্গ। বেনানা রিপাবলিকও হয়ে উঠতে পারে না।’