কালিয়াগঞ্জে তিনটি ঘটনা ঘটেছে। এক, নাবালিকা ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু। দুই, তার প্রতিবাদে থানায় অগ্নিসংযোগ। আর তিন, এখানেই রাজবংশী যুবকের মৃত্যু হয়েছে। প্রথম দুটি ঘটনায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নজর রাখলেও তৃতীয় ঘটনায় পুলিশের রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, পুলিশের এই রিপোর্ট পেয়ে তিনি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তবে বড়লাটের এই রিপোর্ট তলব বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে পর পর দুটি ঘটনায় এমনিতেই চাপা উত্তেজনা ছিল কালিয়াগঞ্জে। মধ্যরাতে সেখানে রাজবংশী যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনার পারদ চরমে উঠল। বিরোধীরা এটাকে অস্ত্র করতে শুরু করেছে। পুলিশ গুলি চালিয়েছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ বিরোধীরা সোচ্চার হয়েছে পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। অথচ এমন কোনও দাবি পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়নি। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তিনি যদি জানতে পারেন পুলিশের গুলিতে যুবকের মৃত্যু হয়েছে তাহলে পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে অনেকেরই বদলি একেবারে পাকা বলে সূত্রের খবর।
কেন উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ? অন্যদিকে রাত ২টো নাগাদ কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। বিষ্ণু নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতেই এই অভিযান। যদিও বিষ্ণুর নাগাল পাওয়া যায়নি। তাঁকে না পেয়ে তখন পুলিশ তাঁর বাবাকে থানায় নিয়ে যেতে চায়। তখন ওই ব্যক্তির জামাই এসে বাধা দেন। আর মৃত্যুঞ্জয় বর্মণ এই কাজে সরাসরি বাধা দেন। তখনই দু’পক্ষের বচসার সময় পুলিশ গুলি চালাতেই মৃত্যু হয় মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের বলে অভিযোগ। এই মৃত্যুঞ্জয় কর্মসূত্রে ২০ বছর ধরে শিলিগুড়িতে থাকেন। বিয়ে বাড়িতে ভোজ খেতে এসেছিলেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ, রাত ২টোর সময়ে তিন গাড়ি পুলিশ এসেছিল। পুলিশ বিষ্ণুকে ধরতে এসেছিল। কিন্তু বিষ্ণুকে না পেয়ে ওর বাবাকে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন মৃত্যুঞ্জয় এসে বলেন, আমার জ্যেঠুকে কেন নিয়ে যাচ্ছো? তখনই একজন পুলিশ ওকে গুলি করে দিতে নির্দেশ দেয়। আর পুলিশ সরাসরি বুকে গুলি চালাতেই সব শেষ। এই ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পরিবার। আর তারপরই পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যপাল। কালিয়াগঞ্জের ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট জানান, পুলিশের কাছে এভাবেই তলব করেছেন বলে সূত্রের খবর।