রাজ্যপাল পদে দু’বছর কাটালেন সিভি আনন্দ বোস। এই উপলক্ষ্যে রাজভবনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সময় কাটান রাজ্যপাল। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আজ বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করেন তিনি। তার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলার সংস্কৃতি এবং রাজনীতি নিয়ে নানা কথা বলেছেন তিনি। বাংলার সংস্কৃতির প্রশংসা করলেও রাজনীতিতে হিংসা এবং দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। এটাকেই রাজনীতির ময়দানে ‘ক্যানসার’ বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু ‘মিষ্টি সম্পর্ক’ গড়ে তুলতে রাজভবন থেকে মিষ্টি, ফল পাঠানো হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের রাজভবনে আসার আমন্ত্রণও জানান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পালটা উপহার হিসেবে আজ শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে রাজ্যপালকেও পাঠানো হল মিষ্টি। এই ‘মিষ্টি’ বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে কি ‘মিষ্টি সম্পর্ক’ গড়ে উঠবে? উঠছে প্রশ্ন। আজই ৬টি উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের কেউই ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেনি। সেক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের মনে এখন ফুর্তির প্রাণ গড়ের মাঠ। তার উপর রাজ্যপালের মিষ্টি বাড়তি পাওনা। শুক্রবার মিষ্টি–ফলের ঝুরির সঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মুখ্যমন্ত্রী চিঠিও দিয়েছেন। সেখানে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনে জামানত জব্দ হল বাম–কংগ্রেসের, ৬টি কেন্দ্রেই রাজনৈতিক প্রত্যাখ্যান
অন্যদিকে রাজ্যপাল যে চিঠি লিখেছেন তাতে তিনি জানিয়েছেন, প্রথম বছর রাজ্য সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বছর সেই সম্পর্কে ‘টানাপোড়েন’ দেখা দিয়েছে। এমনকী নানা বিষয়ে মতানৈক্য হয়েছে। এবার এই তৃতীয় বছরে তিনি মন থেকে চাইছেন, রাজ্য সরকারের হাতে হাত রেখে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলতে। তাই ‘মিষ্টি সম্পর্ক’ গড়ে তুলতে চান বলে সূত্রের খবর। উপহারের পাল্টা উপহার এলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রীদের নিয়ে কবে রাজভবনে আসবেন সেটা এখনও জানা যায়নি। যে প্রার্থীরা জয়ী হলেন তাঁরা বিধায়ক। এবার তাঁদের শপথবাক্য পাঠ নিয়ে ‘মিষ্টি সম্পর্ক’ তিক্ত হয় কিনা সেটাও দেখার।
এছাড়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজভবনেই এক মহিলা কর্মীর সঙ্গে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছিল। আর তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে যায়। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন। প্রয়োজন পড়লে রাস্তায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে কথা বলবেন বলেও জানিয়ে দেন। তাতে খুব চটেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু রাজভবনে যাবেন না বলে মনস্থির করে নেন। কারণ, রাজভবনে নারীদের নিরাপত্তা নেই বলে তাঁর দাবি। তবে ১৫ অগস্ট চায়ের নিমন্ত্রণে রাজভবনের লবিতে উপস্থিত হলেও চা না খেয়ে ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।