রাজ্যপাল পদে দু’বছর কাটালেন সিভি আনন্দ বোস। এই উপলক্ষ্যে রাজভবনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সময় কাটান রাজ্যপাল। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আজ বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করেন তিনি। তার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলার সংস্কৃতি এবং রাজনীতি নিয়ে নানা কথা বলেছেন তিনি। বাংলার সংস্কৃতির প্রশংসা করলেও রাজনীতিতে হিংসা এবং দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। এটাকেই রাজনীতির ময়দানে ‘ক্যানসার’ বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে আজ, শনিবার বাংলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ৬টি কেন্দ্রেই জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি একটি কেন্দ্রেও জিততে পারেনি। এমনকী টাফ ফাইট পর্যন্ত দিতে পারেনি। বরং জেতা আসন মাদারিহাট গোহারা হেরেছে বিজেপি। সেখানে রাজ্যপালের এমন মন্তব্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস দু’বছর বাংলায় কাটানোর পর তিনি শনিবার বলেন, ‘বাংলার রাজনীতির চেহারা দুটি বিষয় হিংসা আর দুর্নীতি ক্যানসারের আকার নিয়েছে। সংস্কৃতির দিক থেকে বাঙলার মানুষ ভাল। কিন্তু রাজনীতি এখানে খুব খারাপ। বাংলার রাজনীতি নিয়ে চিন্তা ও বিশ্লেষণ করে এটা আমার মনে হয়েছে।’
অন্যদিকে বাংলার রাজনীতি নিয়ে কোনও সদর্থক কথা বলেননি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। এই আবহে রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘রাজনৈতিক পদক্ষেপেই হিংসা ও দুর্নীতি তৈরি হয়েছে। আর এখন রাজনৈতিক পদক্ষেপেই সেটাকে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। আমি কোনও রাজনৈতিক দলকে ইঙ্গিত করে এসব কথা বলছি না। কিন্তু আমাদের সামনে বাস্তব যেটা এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে হিংসা এবং দুর্নীতি বেড়েছে। আমার এই ধারণা বদলায়নি কারণ এটা পরিবর্তিত বিষয় নয়। এটা দৃঢ়। বাংলার রাজনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে হবে এবং তাহলে নবজাগরণ ঘটবে।’
আরও পড়ুন: বিজেপির এখন বিধায়ক সংখ্যা কত দাঁড়াল? ৬টি বিধানসভা উপনির্বাচন হেরে ফিকে গেরুয়া
এছাড়া বাংলার রাজনীতির ক্যানসার হিংসা ও দুর্নীতি বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। যা নিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষোভ উগরে দিতে পারে। রাজ্যপালের কথায়, ‘আমি কোনও রাজনৈতিক দলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি না। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রচুর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। আর রাজনৈতিক প্রতিকার আসতে হবে। যে কোনও সমস্যায় আমি সবসময় উপস্থিত থাকি। আমি আমার শান্তিকক্ষ থেকে বেলডাঙায় ঘটে যাওয়া সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছি এবং নোট করছি। কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আমি দুবার ভাবব। প্রয়োজনে আমি সেখানে থাকব। রাজনীতি হচ্ছে আমাদের দেশের শেষ আশ্রয়। এটার পরিবর্তন দরকার। বাংলার মানুষ হিংসা–দুর্নীতি মেনে নেবে না।’