এবার ‘চন্দ্রযান পুরস্কার’ ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল, কেন এমন পদক্ষেপ আনন্দ বোসের?‌

রাজ্যপাল বাংলার সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শিক্ষা নিয়ে নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে সরিয়ে রেখে এককভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেন। ভারতের চন্দ্র অভিযানে ইতিহাস গড়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘চন্দ্রযান পুরস্কার’ এবং ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সেল’ চালুর সিদ্ধান্ত নিলেন।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চাঁদের মাটিতে পা রেখে প্রথম বার্তা দিয়েছে চন্দ্রযান–৩’এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। তখনই ১৪০ কোটি ভারতবাসীও পৌঁছে গেল চাঁদের মাটিতে। এই পরিস্থিতিতে আবার বাংলায় সক্রিয় হয়ে উঠলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মহাকাশ গবেষণায় নতুন ইতিহাস ভারত গড়ে তুলতেই গোটা চন্দ্রযান টিম এবং ইসরোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এমনকী বিজ্ঞান চর্চায় পড়ুয়াদের উৎসাহিত করতে নয়া উদ্যোগ হিসাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে সেরা পড়ুয়াকে ‘চন্দ্রযান পুরস্কার’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল।

এদিকে আগে তিনি আমনে সামনে থেকে শুরু করে পায়ে পায়ে সাতাত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। এবার ‘চন্দ্রযান পুরস্কার’ তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। আসলে তিনি একদিকে পুরস্কার ঘোষণা করে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করলেন। আর একদিকে এই সাফল্যকে সামনে রেখে বাজিমাত করতে চাইলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিট। ইসরোর কন্ট্রোল রুম থেকে ঘোষণা করা হল, সফলভাবে চাঁদে নেমেছে বিক্রম। সঙ্গে সঙ্গে যেন উল্লাসে ফেটে পড়ল আপামর ভারতবাসী এবং রাজনীতিবিদরা। যে যার নিজের মতো করে নানা মন্তব্য করলেন। তবে তার মধ্যে চন্দ্রযান পুরস্কার তাৎপর্যপূর্ণ।

পুরস্কারে ঠিক আছে কী?‌ অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরল এই দুই রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সেরা পড়ুয়াকে ‘চন্দ্রযান পুরস্কার’ দেওয়া হবে বলে ঠিক করেছেন রাজ্যপাল। কেরল তাঁর নিজের রাজ্য। আর পশ্চিমবঙ্গে তিনি এখন রাজ্যপাল। এখানের রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত চলছে তাঁর। তাই এখানে বাড়তি কিছু করে নিজেকে লাইমলাইটে আনতে চান বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ এই রাজ্যে ছাত্রছাত্রীরা বহু স্কলারশিপ, অনুদান থেকে সামাজিক প্রকল্প পাচ্ছে। সেখানে এই পুরস্কার হিসেবে ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এবার রাজভবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সেল চালু করা হবে। যে সেল কাজ করবে শুধু মেধাবী পড়ুয়াদের বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহিত করে তুলতে। দেশের সব প্রান্তেই এই ঘটনার পর ইতিহাস গড়ার আনন্দে ভেসেছে মানুষ। তাই সেই কৃতিত্বকে সম্মান জানাতেই এই পদক্ষেপ রাজভবনের। রাজ্যপাল বাংলার সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শিক্ষা নিয়ে নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনকী রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে সরিয়ে রেখে এককভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। এবার ভারতের চন্দ্র অভিযানে ইতিহাস গড়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘চন্দ্রযান পুরস্কার’ এবং ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সেল’ চালুর সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যপাল। আর বলেন, ‘‌প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোটা বিশ্বকে বুঝিয়েছেন যোগচর্চার মাধ্যমে ‘ইনার স্পেস’–কে জয় করা যায়। আর এবার চন্দ্রযান দেখিয়ে দিল আমরা ‘আউটার স্পেস’–কেও জিততে পারি। আমাদের বিজ্ঞানীরা গোটা দেশকে গৌরবান্বিত করেছেন।’‌