এতদিন রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে সরিয়ে রেখে নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন। এবার আর লোক খুঁজে পেলেন না। তাই এখন উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত বলে রাজভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই সেখানে পড়ুয়াদের সার্টিফিকেট–সহ অন্য কিছু পেতে আর অসুবিধা হবে না। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে পড়ুয়াদের সঙ্গে সরাসরি রাজ্যপালের সাক্ষাৎ হবে। তখন আবার রাজ্যপাল তাঁদের কি বলেন সেটা নিয়েই এখন গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজভবন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যের যে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয় এখন উপাচার্যহীন, সেগুলিতে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আচার্য নিজেই দায়িত্ব পালন করবেন। আসলে এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে সরাসরি রাজ্যের শিক্ষা দফতরের ভিতরে ঢুকে পড়তে চাইছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার আরও এখন বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকবে। এদিনই ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির নতুন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। নতুন উপচার্য হয়েছেন রাজকুমার কোঠারি।
অন্যদিকে রাজভবনের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যের যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদ খালি রয়েছে সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ডিগ্রি, শংসাপত্র এবং অন্যান্য নথি পেতে অসুবিধা হচ্ছে। তাঁদের সাহায্যের জন্য রাজ্যপাল আচার্য হিসাবে তার ক্ষমতাবলে নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নিজেই সেই দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যেই জানতে পেরে গিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বাইরে আছেন। কিন্তু তাঁকে এই খবর জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: প্রত্যাহার অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন, সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিল স্বাধিকাররক্ষা কমিটি
আর কী জানা যাচ্ছে? রাজভবনের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, একটি ইমেল আইডির। সেটি হল— amnesaamne.rajbhavankolkata@gmail.com — এখানে যে কোনও সমস্যার কথা জানাতে পারবেন পড়ুয়ারা। একটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে—০৩৩ ২২০০১৬৪২। এই নম্বরে ফোন করতে পারবেন পড়ুয়ারা। এমনকী চাইলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন তাঁরা। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু উপাচার্য নিয়োগ করেই নয়, উপাচার্য নিয়োগ না করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। অবিলম্বে সর্বোচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ দরকার। আমরা আইনি পথে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছি’।