এটা প্রত্যাশিতই ছিল। শুধু হাওয়ালা জৈন কাণ্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় রাজ্যপাল আসতেই এবার তিনি বেঁকে বসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘রাজ্যপালের নাম রয়েছে জৈন হাওয়ালার চার্জশিটে।’ এই বিস্ফোরক অভিযোগের পরই সপ্তমে উঠেছে রাজ্যপাল বনাম মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধ। আর তার জেরেই জগদীপ ধনখড় জানিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভা অধিবেশনের জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়া ভাষণ তিনি পাঠ করবেন না। কারণ তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। আর তিনি মনে করছেন, এই খসড়া–ভাষণ সাংবিধানিক ‘মূল্যবোধের পরিপন্থী’।
আগামী ২ জুলাই বিধানসভায় প্রথম অধিবেশন বসছে। সেখানে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার কথা। তা দিয়েই অধিবেশন শুরু হবে। রীতি অনুযায়ী, রাজ্যপালের ভাষণ ঠিক করে দেয় রাজ্য সরকার। এবারও তাই করা হয়েছে। এমনকী রাজ্য মন্ত্রিসভায় ভাষণের খসড়া পাশ করে তা রাজ্য সরকার রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। ভাষণের সেই খসড়া হাতে পাওয়ার পর তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন রাজ্যপাল। কারণ তাতে যা লেখা ছিল তার বিপরীত বক্তব্য এতদিন পেশ করে এসেছেন রাজ্যপাল। তার প্রেক্ষিতে তিনি একটি চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
কী লেখা আছে খসড়ায়? রাজ্যপালের দাবি অনুযায়ী, ‘আমার মনে হল খসড়ায় এমন কিছু কথা লেখা রয়েছে যা নিয়ে আমার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। তাই আমি একটি চিঠি দিয়েছি তাঁকে। খসড়ায় আমার নজরে এমন কিছু বিষয় এসেছে যা নিয়ে আমি আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে চাই।’ রাজ্যপালের দাবি, এই চিঠি পাওয়ার পরই তাঁকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই ওই খসড়া মন্ত্রিসভা থেকে পাশ হয়ে গিয়েছে। আর রাজ্যপাল দাবি করেন, ভাষণের খসড়ায় এমন কিছু বক্তব্য রয়েছে যা অবাস্তব।
রাজ্যপালের দাবি অনুযায়ী, এই ফোনে কথোপকথনের পরই সাংবাদিক বৈঠক করে জৈন হাওয়ালা মামলার ‘অসত্য’ অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। খসড়ায় যা লেখা হয়েছে তা সংবিধানের পরিপন্থী। তাই তিনি তা পাঠ করবেন না। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন যদি এমন কিছু লেখা হয় তবেই।। এখন দেখার রাজ্যপাল সেই খসড়া ভাষণ পাঠ করেন নাকি নিজস্ব ভঙ্গিতে অন্য পথে হাঁটেন। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় স্পষ্ট করেন, ‘ভাষণে যদি যা খুশি লিখে দেওয়া হয় যা সংবিধানের পরিপন্থী, তাহলে আমি কি তা পাঠ করতে পারি? আমি বলতে চাই না কী কী কথা লেখা হয়ে থাকতে পারে। প্রত্যেকটি ভাষণ সাংবিধানিক মূল্যবোধের উপর তৈরি করতে হয়।’