পটাশপুরের বিজেপি কর্মী মদন ঘোড়ুইয়ের মৃত্যুতে ফের রাজ্যকে নিশানা করলের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে রবিবার টুইট করেন রাজ্যপাল। একইসঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যে আইন–শৃঙ্খলার অবনতির প্রসঙ্গে তুলে তিন পাতার এখটি চিঠিও পাঠিয়েছেন। যাতে প্রাক্তন সেনা জওয়ান বলবিন্দর সিংয়ের গ্রেফতারি এবং ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লকে খুনের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল।
এদিন টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘পুলিশি হেফাজতে মদন ঘোড়ুইয়ের মৃত্যু ভয়াবহ। এই ঘটনা অমানবিক অত্যাচার, মারধর এবং হেফাজতে মৃত্যুর আরও একটি ভয়ঙ্কর উদাহরণ। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, সংবিধান মেনে চলুন। প্রশাসন সংবিধান মেনে চলছে না। রাজনৈতিক উদ্দেশে বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় জড়ানোর কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। এটা নিশ্চিত করুন যে রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা যেন ডিজিপি–কে অবজ্ঞা করতে না পারেন। এটা এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে যে রাজ্যে পুলিশের রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। প্রশাসনের প্রতিটি কাজে হস্তক্ষেপ করছে কলকাতা পুলিশ। এটা পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার ইঙ্গিত।’
এদিন আইপিএস, আইএএস–দের রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর অভিযোগ, একাধিকবার রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তাকে ডেকে পাঠিয়েও যথোপযুক্ত উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল।
এদিন তদন্তসাপেক্ষ একটি ঘটনায় রাজ্যপালের সরসারি হস্তক্ষেপের সমালোচনা করে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘এখন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধান কার্যালয় হল রাজভবন। আমি শুনেছি যে রাজ্যপাল আইনজ্ঞ। কিন্তু কোনও বিষয়ে তদন্তের আগে কীভাবে এক রাজ্যপাল এমন অভিযোগ তুলছে তা আমার জানা নেই। সুতরাং আইন আইনের মতো চলবে। প্রশাসন প্রশাসনের মতো চলবে। প্রশাসনের মাথায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে প্রশাসন চালানোর শিক্ষা কাউকে দিতে হবে না।’
উল্লেখ্য, ভাইপো কিশোর ঘড়ুইয়ের প্রণয়ঘটিত একটি ঘটনায় কাকা মদন ঘোড়ুইকে ২৭ সেপ্টেম্বর পটাশপুর থানার পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। জেল হেফাজতে থাকাকালীন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল, পরে সেখান থেকে এসএসকেএম হাসাপতালে নিয়ে আসা হয়। ১৩ অক্টোবর সেখানে মারা যান এই বিজেপি কর্মী। বিজেপি এই ঘটনায় তৃণমূল জড়িত বলে মামলা করে হাইকোর্টে। তার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এই ঘটনায় দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়। যা করা হয় আর জি কর হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং তার ভিডিওগ্রাফি আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে হবে হাইকোর্টে।