কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠন হয়নি। হতে চলেছে এনডিএ সরকার। যার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। বাংলাতেও তৃণমূল কংগ্রেস জিতে নিয়েছে ২৯টি লোকসভা আসন। ফলে ভোট এখানেই শেষ। কিন্তু বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক চিরতিক্ত হয়ে রয়েছে। এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে চড়ালেন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রণংদেহি মেজাজে ব্রাত্য বসুর দাবি, ৭–১৫ দিনের মধ্যে রাজ্যপালকে বাংলা থেকে চলে যেতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজভবনের পিস রুম নিয়ে চর্চা হয়েছে। রাজ্যপাল একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপচার্য নিয়োগ করছেন। এই সামগ্রিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। তখনই তিনি কড়া ভাষায় এই তথ্যই দেন।
এদিকে রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত বেড়েই চলেছে রাজ্য সরকারের। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে প্রায়ই বাকযুদ্ধ হয় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। এবার সেটাই যেন চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেল। রাজ্যপালের কাজ নিয়ে প্রশ্ন করতেই বাংলার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘১৫ দিনের মধ্যে বাংলা থেকে চলে যেতে হবে। তাঁকে যেতে হবে। আজ হোক বা কাল। কেরলে ফিরে যেতে হবে। উপাচার্য নিয়োগ করছেন রাজ্যের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী। তাও সুপ্রিম কোর্টে ভাল দাবড়ানি খাওয়ার পর।’ এই মন্তব্য নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে। সংঘাত যে আরও বাড়বে সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘অধিকার অর্জন করেই বিধানসভায় এলাম’, স্পিকারের সঙ্গে দেখা করার পর মন্তব্য সায়ন্তিকার
অন্যদিকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। শুধু কলকাতাতেই নয় নয়াদিল্লির পাঁচতারা হোটেলে বাংলার এক নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণ করার অভিযোগও রয়েছে। এই দুই নারীই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সুতরাং তার পর থেকেই বেশ ব্যাকফুটে রয়েছেন রাজ্যপাল। আর সব বিষয় মিলিয়ে ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘রাজ্যপালকে নিয়ে আমি ভাবছি না। আর দিন সাত–দশ বা ১৫ দিন। তারপর রাজ্যপালকে যেতে হবে। আমি তাঁকে বারবার বলেছিলাম, আপনার মতি ফিরুক। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। মুখ্যমন্ত্রীর কথা মেনে নিন। তিনি তিনবারের বিপুল জনাদেশ পাওয়া মুখ্যমন্ত্রী। এখানে এসে জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করবেন না। কিন্তু তিনি শুনলেন না। সেটা তাঁর ব্যাপার। কিন্তু তাঁকে যেতে হবে। আজ হোক বা কাল। কেরলে ফিরে যেতে হবে।’
এছাড়া আগেও রাজ্যপালকে নিশানা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘একটা সাদা হাতির মতো পদ, যেটা তৈরি করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে, কখনও মাদ্রাজ, কখনও কলকাতা, কখনও বোম্বে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। সে পদ রাখার আদৌ কোনও যৌক্তিকতা আছে কি? যার সঙ্গে কোনও ভাল–মন্দ কিছু নেই।’ রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার থেকে শুরু করে জুনিয়র অ্যাপয়েন্টি নানা বিশেষণ ব্যবহার করা হয়েছিল। রাজ্যপালও নানা কথা বলেছিলেন। রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের ঠোকাঠুকি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোজই নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে রাজ্য–রাজভবন সংঘাতে। এবার রাজ্যপালকে নিশানা করে শিক্ষামন্ত্রী বার্ত্য বসুর এই আক্রমণ চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।