স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি এখন রাজ্য–রাজনীতিতে বড় ইস্যু। এই অবস্থায় হইচই পড়েছে বাম জমানায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগের একটি দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে। বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে ৬১৪ জনকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিল স্যাট। ২০১০ সালে নিয়ম ভেঙে খাদ্যদফতরে নিয়োগ করা হয়েছিল ৬১৪ জন গ্রুপ–ডি কর্মীকে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের চাকরি বাতিল করে দিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার আগে সিপিআইএম খাদ্য দফতরে ইন্টারভিউয়ের নামে প্রহসন করে ‘গ্রুপ ডি’ পদে ৬১৪ জনকে নিয়োগ করেছিল। এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টও একটি পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, নিয়োগের নামে প্রহসন হয়। ওই পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করেই স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল তথা স্যাট রায় দিয়েছে ২০১০ সালে নিয়ম ভেঙে যে ৬১৪ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল তাদের প্রত্যেককেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।
আর কী বলেছে স্যাট? এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সিলেকশন বোর্ডের পাঁচ সদস্য–সহ যুক্ত অন্যান্যদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশও দিয়েছে স্যাট। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের শাস্তি দিতে বিভাগীয় তদন্ত–সহ সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে খাদ্যদফতরকে। এমনকী আট সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে স্যাটের বিচারপতি সৌমিত্র পাল ও প্রশাসনিক সদস্য সৈয়দ আহমেদ বাবার বেঞ্চ।
ঠিক কী ঘটেছিল আগে? আদালত সূত্রে খবর, ২০০৮ সালে ‘গ্রুপ ডি’ পদে নিয়োগের জন্য খাদ্য দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে। ২০১০ সালে ৬১৪ জনকে নিয়োগ করা হয়। এই নিয়োগের বিরুদ্ধেই ২০১২ সালে স্যাটে মামলা হয়। স্যাট মামলাটিকে কলকাতা হাইকোর্টে পাঠায়। ২০১৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টে তৎকালীন বিচারপতি নিশীথা মাত্রের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, একদিনে ৮০০ জনের ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ করা একটা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। স্যাটে এই মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী ছিলেন গৌতম পাঠক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রায়ের বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। সরকার বিষয়টি বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ করবে।’