উত্তর দিনাজপুরে চোপড়ায় দম্পতিকে রাস্তায় ফেলে মারার ঘটনায় সরকারের তরফ থেকে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানতে চেয়ে রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। জানা যায়, চোপড়ায় এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান এক তরুণী। আর সেই অপরাধেই সেই তরুণী ও তাঁর প্রেমিককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মার মারে তাজমুল ওরফে জেসিবি। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। (আরও পড়ুন: আগামী ৩ মাসও পোয়া বারো রাজ্য সরকারি কর্মীদের, মিলবে বাড়তি DA, বরাদ্দ ১১২৯ কোটি)
আরও পড়ুন: সীমিত সময়ের জন্যে কয়েকশো টাকা সস্তায় মিলছে ঘরোয়া রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার!
চোপড়কাণ্ডে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যায়, হাতে গোছা লাঠি নিয়ে রাস্তায় ফেলে তরুণীকে বারবার সজোরে আঘাত করছে এক যুবক। আর চিৎকার করছেন তরুণী। মারের চোটে তরুণী মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। কোনও প্রতিবাদ না করেই সেই দৃশ্য দেখছে সাধারণ মানুষ। লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দিঘলগাঁও এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায় এই ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, ওই তরুণী আসলে একজন গৃহবধূ। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা। ভিডিয়োতে তার পাশে যে যুবককে দেখা যাচ্ছে সেই যুবকের সঙ্গেই তিনি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। তাই নিয়ে গ্রামে একটি সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল। যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ইনসাফ সভা’। সেই সভার নেতৃত্বে ছিল বাহুবলি জেসিবি। সেখানেই দুজনকে নৃশংসভাবে অত্যাচার করা হয়। শুধু তাই নয়, দুজনকে আর্থিক জরিমানা করা হয় বলেও জানা গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, গ্রামে প্রায়ই সালিশি সভা ডাকা হয়। এদিকে এই গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত তাজমুল ওরফে জেসিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়। (আরও পড়ুন: চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ভাবনা সরকারের, ঘরোয়া বাজারে পড়বে কোন প্রভাব?)
আরও পড়ুন: টেকঅফ করতেই পড়ে গেল বোয়িংয়ের চাকা! তারপর বিমানের যা হল… দেখুন ভাইরাল ভিডিয়ো
এই সবের মাঝেই এই ঘটনা নিয়ে সরাসরি রাজ্যের তৃণমূল সরকারের দিকে আঙুল তুলেছিল বিরোধী বিজেপি। এই ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল শরিয়া বিচারালয় চালাচ্ছে। এদিকে জানা যায়, চোপড়া থানায় তাজমুলের বিরুদ্ধে অন্তত ১ ডজন অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বিধায়ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে না। এলাকায় বাহুবলী হিসাবে তার এমনই প্রতাপ যে লোকে জেসিবি বলে ডাকে। সালিশি সভায় দ্রুত বিচার দিতে তার জুড়ি নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক হামিদুর রহমান বলেছিলেন, 'মুসলিম রাষ্ট্র অনুযায়ী কিছু নিয়ম ও ন্যায়বিচার আছে। যাইহোক, আমরা একমত যে যা ঘটেছে তা অনেকটা চরম ছিল। এখন এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ঘটনার নিন্দা জানাই। কিন্তু মহিলাটিও অন্যায় করেছেন। তিনি তাঁর স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে ছেড়ে শয়তান জানোয়ারে পড়িণত হন।' বিধায়কের এহেন মন্তব্যের জেরে দলের তরফ থেকে তাঁকে শোকজ করা হয়েছিল।