বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > Haridevpur Murder Case: বিয়ের টোপ দিয়ে ডাকা হয় অয়নকে, হরিদেবপুর কাণ্ডে আরও তিন প্রেমিকের হদিশ

Haridevpur Murder Case: বিয়ের টোপ দিয়ে ডাকা হয় অয়নকে, হরিদেবপুর কাণ্ডে আরও তিন প্রেমিকের হদিশ

যুবক অয়ন মণ্ডল

বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অয়নকে মাঝেমধ্যে বাড়িতে ডেকে পাঠানো হতো। কিন্তু বাগে পাওয়া যাচ্ছিল না। মাঝে একবার মারধর করা হলেও কোনওক্রমে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় অয়ন। পরিকল্পনার অভাব থেকে যাচ্ছিল। তাই এবার সমস্ত কিছু চূড়ান্ত করার পরই মেয়ের বিয়ে নিয়ে কথা বলার জন্য অয়নকে বাড়িতে ডেকে পাঠান রুমা।

প্রায় ৬ মাস ধরে তৈরি করা হয়েছিল খুনের ষড়যন্ত্র। শুধু বাগে পাওয়া যাচ্ছিল না যুবক অয়ন মণ্ডলকে। এরপর পরিকল্পনা বাস্তবায়িক করতে তাঁর সামনে রাখা হয় বিয়ের টোপ। বিজয়া দশমীর রাতে মেয়ের বিয়ে নিয়ে কথা বলার জন্যই অয়নকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন অভিযুক্ত প্রীতির মা রুমা জানা। আর অয়ন সেই টোপ গেলা মাত্র পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। বান্ধবীর পরিবারকে জেরা করে হরিদেবপুর কাণ্ডে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। অয়নের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আর মোবাইল না পেয়ে তাঁকে খুনের ছক কষা হয়।

লালবাজার তদন্তে নেমে কী তথ্য পেয়েছে?‌ তদন্তে নেমে পুলিশ অফিসাররা জানতে পারেন, অয়নকে হঠাৎ করে মারা হয়নি। সবটাই হয়েছে পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে। আর তার নেপথ্যে রয়েছে বান্ধবী প্রীতির একাধিক সম্পর্ক। অয়নের পাশাপাশি আরও তিনজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন প্রীতি। তিন প্রেমিকের সঙ্গেই তিনি নিয়মিত ফোনালাপ এবং মেলামেশা করতেন। প্রীতির বাড়িতেও ছিল তাঁদের অবাধ যাতায়াত। তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অয়ন। দু’জনের ঝগড়া হয়। প্রীতির নাবালক ভাই জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, অয়নের সঙ্গে তার দিদি প্রীতির বচসা চলছিল। সেই বচসায় যোগ দেয় তার মা। পরে বাবা দীপক জানাও বাড়িতে এসে যোগ দেন। বচসা চলাকালীন মা ও দিদিকে অয়ন গালিগালাজ করতে থাকে এবং দুর্ব্যবহার করে। তখন ইট দিয়ে সে অয়নের মাথায় আঘাত করে। তাঁর মাথা থেঁতলে যায়। এরপর ওই কিশোর তার বন্ধুদের ফোন করে দেহটি মালবাহী গাড়িতে তোলে লোপাটের জন‌্য। আর মৃত্যু নিশ্চিত করতে অয়নের গলায় ফাঁস দেয় তারই এক বন্ধু।

জেরা প্রীতির মা কী জানিয়েছে?‌ দফায় দফায় জেরার মুখে প্রীতির মা রুমা জানা পুলিশকে জানান, তাঁর মেয়েকে মারধর পর্যন্ত করেন প্রেমিক অয়ন। আর তা মেনে নিতে না পেরেই অয়নকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। এখান থেকেই খুনের পরিকল্পনা মাথায় আসে। মেয়ে প্রীতির সঙ্গেই মূলত সম্পর্ক ছিল অয়নের। তার সঙ্গে অয়নের সম্পর্কের বিষয়টি রুমা অস্বীকার করেন। রুমা জানান, অয়ন প্রীতির অশ্লীল ছবি তুলে রেখেছিল। নার্সিং হস্টেল থেকে যখনই প্রীতি বাড়িতে ফিরত, তখনই অয়ন তাঁকে সহবাসের জন‌্য চাপ দিত। আর তা না করলেই অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ফাঁসের হুমকি দিত অয়ন।

তারপর কী পরিকল্পনা তৈরি হয়েছিল?‌ প্রীতি ও তাঁর মা পুলিশকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অয়নকে মাঝেমধ্যে বাড়িতে ডেকে পাঠানো হতো। কিন্তু বাগে পাওয়া যাচ্ছিল না। মাঝে একবার মারধর করা হলেও কোনওক্রমে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় অয়ন। পরিকল্পনার অভাব থেকে যাচ্ছিল। তাই এবার সমস্ত কিছু চূড়ান্ত করার পরই মেয়ের বিয়ে নিয়ে কথা বলার জন্য অয়নকে বাড়িতে ডেকে পাঠান রুমা। তারপরই তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। বন্ধু রাজুকে অয়ন ব‌্যাপারটি জানায়। রাজু তাকে প্রীতির বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দেয়। জেরা এখনও চলছে।

বন্ধ করুন