মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার স্বতঃপ্রণোদিত মামলার আবেদন গ্রহণ করল কলকাতা হাইকোর্টে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে এই আবেদন জানিয়েছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কৌস্তভ বাগচী এবং অনিন্দ্যসুন্দর দাস। তবে পদক্ষেপের বিষয়টি এখনও স্পষ্ট করেনি আদালত।
আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁদের হলফনামা দিতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় মামলার আবেদনের শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আইনজীবীদের আবেদন গ্রহণ করা হলেও কী পদক্ষেপ করা হবে তা আপাতত বিবেচনাধীন রাখা হচ্ছে।
আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কৌস্তভ বাগচী এবং অনিন্দ্যসুন্দর দাস ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্যের বিরুদ্ধে পাঁচটি আবেদন জমা পড়ে। প্রধান বিচারপতি শুনানির পর বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা তা আপাতত বিবেচনাধীন থাকছে। তবে আবেদনটি গ্রহণ করা হল।'
আরও পড়ুন। আদালত নিয়ে মমতার মন্তব্য, স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন বিকাশের
তবে আবেদন গ্রহণ করা হলেও মামলাটির ভবিষ্যৎ কী হবে তা একটি বেঞ্চ ঠিক করবে। প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ জানায়, আদালত নিয়ে মন্তব্যে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে কিনা তা ওই বেঞ্চ ঠিক করবে।
বৃহস্পতিবার সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'অপরাধমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। পদক্ষেপ না করলে সবাই আদালতকে দেখে হাসাহাসি করবে। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আদালত বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বিচারপতির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বিচারপতিরা নিজের বিচারবুদ্ধি দিয়ে কাজ করেন। কিন্তু গোটা হাই কোর্ট বিক্রি হয়ে গিয়েছে, এমন মন্তব্য কেন? আদালতের সম্মানহানি হচ্ছে।'
সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। এর ফলে বাতিল হয় শিক্ষক, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি।
এই রায়ের বিরুদ্ধেই সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমানের গলসিতে প্রচার সভায় তিনি বিজেপিকে নিশানা করে বলেন,'এরা কোর্ট কিনে নিয়েছে, আমি সুপ্রিম কোর্টের কথা বলছি না। সিবিআই-কে কিনে নিয়েছে, বিএসএফ-কে কিনে নিয়েছে!' তবে বিচারপতিদের নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।
(দেশের আইন ব্যবস্থা ও আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হিন্দুস্তান টাইমস। প্রতিবেদনের প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর উক্তিকে ব্যবহার করা হয়েছে।)
আরও পড়ুন। চাকরিহারাদের এপ্রিল মাসের বেতন দেবে রাজ্য, SC-তে মামলা চলাকালীনও মিলবে মাইনে