মেদিনীপুরের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তিনজন প্রসূতির অবস্থা গুরুতর। কাল সোমবার এনিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়বে। চারজন প্রসূতির মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো হয়েছে। কিন্তু বাকি তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সেকারণে তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা যায় কি না সেটা দেখা হবে। তবে কলকাতায় নিয়ে আসার মতো শারীরিক পরিস্থিতি তাঁদের রয়েছে কি না সেটাও দেখা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, আগে ওদের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট কাল আসবে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, গ্রিন করিডর করে প্রসূতিদের কলকাতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন প্রয়োগে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর। এনিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে দ্রুত বৈঠকে বসে স্বাস্থ্য় দফতরের ১৩ সদস্যের কমিটি। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে স্যালাইন থেকেই ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে ।
প্রসূতি মামনি রুইদাসের মৃত্যুর খবরে গোটা রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। মাতৃহারা হয়েছে সদ্যোজাত। এদিকে সূত্রের খবর, আরও চারজন প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়ে মেদিনীপুরে। এদিকে শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের টিম মেদিনীপুরে গিয়ে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছিল।
এদিকে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে স্য়ালাইন থেকেই ওই প্রসূতিরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ওই ধরনের বিশেষ স্যালাইন রক্তক্ষরণে রোধে ব্যবহার করা হয়। ইন্টারভেনাস ফ্লুইড। আর সেই আরএল এবার বিতর্কের কেন্দ্রে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফ্লুইড অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতার প্রয়োজন।
মৃত্যু ও অসুস্থতার সঙ্গে স্যালাইন ও একটি ইঞ্জেকশনের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে আপাতত অসুস্থ প্রসূতিতে কলকাতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা আপাতত মেদিনীপুর মেডিক্যালের সিসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের দ্রুত কলকাতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত আর যাতে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি না হয় সেকারণেই এই উদ্যোগ।
প্রাথমিকভাবে কী অনুমান করা হচ্ছে?
প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে স্যালাইন ব্যবহার করার পরে তাঁদের শরীর হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গিয়েছে। রক্ত কণিকা ভেঙে গিয়েছে। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণও কমেছে। সংক্রমণ দেখা দিয়েছে কিডনিতে। তিনজন প্রসূতির ডায়ালিসিস করা হচ্ছে বলেও খবর। প্রসবের পরে যে স্যালাইন ও ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথায় সমস্যাটি তৈরি হয়েছিল তা দেখা হচ্ছে। আর কোনও প্রসূতিকে এই ধরনের স্যালাইন ও ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল কি না সেটাও দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গেই গোটা ঘটনায় ভয়াবহ উদ্বেগ ছড়িয়েছে। আপাতত কলকাতায় আনার ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে।