ভর্তির আগে হাসপাতালের দাবি মেনে রোগীর আত্মীয়রা মেটাতে পারেননি পুরো টাকা। ৩ লাখের মধ্যে বাকি ছিল ২০,০০০। বকেয়া না মেটালে ভর্তি নেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছিল ডিসান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই দড়িটানাটানিতে হাসপাতালের সামনে দীর্ঘক্ষণ অ্যাম্বুল্যান্সে পড়ে থেকে মৃত্যু হয় বৃদ্ধের সেই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল রাজ্যের স্থাস্থ্য কমিশন। আগামী ১৯ অগাস্ট মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা।
ঘটনা গত সোমবারের। কলকাতার পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধার করোনা ধরা পড়ে। পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধাকে ডিসান হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন পরিজনরা। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ভর্তির সময় ৩ লক্ষ টাকা জমা রাখতে হবে। এর পর টাকার জোগাড় শুরু করেন আত্মীয়রা। ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা মিটিয়েও দেন। ভর্তির জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে আসেন রোগীকে। কিন্তু বকেয়া ২০০০০ টাকা না মেটালে রোগীকে ভর্তি করা হবে না বলে জানিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোগীর আত্মীয়রা জানান কার্ডের লিমিট শেষ হয়ে যাওয়ায় আর টাকা তোলা যাচ্ছে না। রাত ১২টা বাজলেই টাকা মিটিয়ে দেবেন তাঁরা। কিন্তু হাসপাতালের তরফে সেসব কথায় কর্ণপাত করা হয়নি। উলটে রোগীর আত্মীয়দের হাতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস ধরিয়ে দিয়ে অনলাইনে বকেয়া মেটাতে বলা হয়। এসব যখন চলছে তখন অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে গরমে ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়েন বৃদ্ধা। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা এসে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের দাবি, ওই রোগীকে মৃত অবস্থাতেই আনা হয়েছিল।
এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে স্বাস্থ্য কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় একথা জানিয়েছেন। এই প্রথম কোনও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল কমিশন। এই ঘটনার তদন্তে যে হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধাকে আনা হয়েছিল তার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলছে কমিশন।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ভুরিভুরি অভিযোগ রয়েছে। তাতে রাশ টানতেই স্বাস্থ্য কমিশনের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।