একে করোনা সংক্রমণে রক্ষে নেই, তার সঙ্গে দোসর হয়েছে ভারী বৃষ্টি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতেই মহাসপ্তমী পালন করবে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি। শুক্রবার দুপুরে সুন্দরবন দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকবে অতি গভীর নিম্নচাপ। যার প্রভাবে প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়ারও সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। পুজোর দ্বিতীয় দিনেও সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়া দিয়েই এবার বাংলায় দেবীর বোধন হয়েছে। সপ্তমীর সকালেও একই অবস্থা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে আরও গভীর হয়েছে। যার প্রভাবে মহাসপ্তমীতেও দিনভর বৃষ্টি চলবে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর তাদের বুলেটিনে জানিয়েছে, বর্তমানে নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে সাগরদ্বীপ থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সেটা অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। মহাসপ্তমীর দুপুরে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে স্থলভূমি অতিক্রম করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ, গত ২০ মে যে জায়গা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় আমফান স্থলভূমিতে ঢুকেছিল, এই অতি গভীর নিম্নচাপটি ঠিক সেই পথই অনুসরণ করতে পারে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যাোপাধ্যায় জানান, ‘গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। কলকাতা থেকে ৩৫০ কিমি দক্ষিণ দক্ষিণ–পূর্বদিকে রয়েছে এটি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। উত্তর–উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে’। এই নিম্নচাপটির প্রভাবে, শুক্রবার অর্থাৎ সপ্তমীতে পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণা এবং কলকাতায় অতি ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। উপকূলবর্তী অঞ্চলে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার হতে পারে। সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। তবে সব থেকে বেশি প্রভাব পড়বে দুই ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী অঞ্চলে। সেই কারণেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
তুমুল বৃষ্টির জেরে শহুরে এলাকায় জল জমতে পারে। সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের যেতে বারণ করা হয়েছে। সুন্দরবনে ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কলকাতায় জোর বৃষ্টির সঙ্গে ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া থাকবে। শহরের কিছু কিছু এলাকা জলমগ্নও হয়ে পড়তে পারে। ফলে মহাসপ্তমীর আনন্দ যে অনেকটাই মাটি হয়ে যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুর্গাপুজোর মধ্যে শেষবার কবে কোনও গভীর নিম্নচাপ পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে হানা দিয়েছে, তা স্মরণে নেই। সেক্ষেত্রে এবারে পুজোর এই আবহাওয়া এক্কেবারেই আলাদা। তবে এটাও ঠিক যে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে যতটা বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছিল, ততটা হচ্ছে না। বিকেলের পর বৃষ্টির দাপট কমবে। অষ্টমীর সকাল পর্যন্তও এই নিম্নচাপের কিছু প্রভাব থেকে যেতে পারে। শনিবার সকালেও হালকা বৃষ্টি হতে পারে কোথাও কোথাও।