উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। আগামী ১৮ মার্চ শেষ হবে। তবে সঠিক সময় ফলাফল প্রকাশ করার চাপ আছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের। তাই এখন থেকে হয়ে যাওয়া পরীক্ষাগুলির খাতা দেখা শুরু হয়েছে। এই পরীক্ষার খাতা উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা তো দেখছেনই, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরাও দেখছেন। তবে এবার সেটা কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিকের খাতা স্কুলের আংশিক সময়ের শিক্ষকদেরও দেখতে হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। আর সে কথা মেনে নিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও। এই পথে হাঁটলে কি সঠিক মূল্যায়ন হবে? উঠছে প্রশ্ন।
শিক্ষকদের সূত্রে পাওয়া খবর, এখন শিক্ষকের সংখ্যা কম। তাই এই পথে হাঁটতে হচ্ছে। শিক্ষক নিয়োগ করতে গেলেই মামলা করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে নিয়োগ আটকে যাচ্ছে। তার জেরে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের। বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে। তাই এই পথে হাঁটা হচ্ছে। তবে সব খাতা আংশিক সময়ের শিক্ষকরা দেখছেন না। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে গত দু’বছরে কৃত্রিম মেধা, ডেটা সায়েন্স এবং কিছু নতুন বিষয় চালু হয়েছে। ওই নতুন বিষয়ের জন্য পৃথকভাবে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই ওই বিষয়ের পরীক্ষার খাতাগুলি আংশিক সময়ের শিক্ষকদের দেখতে দেওয়া হচ্ছে। আংশিক সময়ের শিক্ষকরা কি বিষয়গুলি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল? তাঁরা কি সঠিক মূল্যায়ণ করতে পারবেন? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে চালু হবে স্মার্ট ক্লাস, শিক্ষার উন্নতিতে বড় পদক্ষেপ রাজ্যের
এই ঘটনা নিয়ে পক্ষে–বিপক্ষে মত আছে। প্রধান শিক্ষক–শিক্ষিকাদের সংগঠন আছে। ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’ সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘বাংলায় যদি শিক্ষক নিয়োগ ঠিক মতো হতো তাহলে এমন সমস্যা হতো না। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতার মূল্যায়ন যথাযথ না হলে নানা প্রশ্ন উঠবে। শিক্ষক নিয়োগ করার ক্ষেত্রে সমস্যার কথা মাথায় রেখে শিক্ষা দফতর বিশেষ পদ্ধতিতে আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগের কথা বলেছে। কিন্তু বেশিরভাগ স্কুলই সেই নিয়ম মানে না। তাই ওই শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন থেকেই যায়। সেটাই সমস্যা।’
২০১২ সালের পরে বহু মাধ্যমিক স্তরের স্কুল উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়েছে। অথচ পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ হয়নি বলে অভিযোগ। তার মধ্যে নানা নতুন বিষয় এসেছে। আর পুরনো বিষয়ের শিক্ষকরা অবসর নিয়েছেন। কিন্তু নিয়োগ হয়নি। তাই এই নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। যদিও এই বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘খাতা দেখার শিক্ষকের অভাব রয়েছে নতুন বিষয়গুলিতে। মাধ্যমিক স্তরের যে শিক্ষকরা উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখছেন তাঁদের সেই খাতা দেখার যোগ্যতা আছে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা পড়িয়ে আসছেন। কৃত্রিম মেধা, ডেটা সায়েন্সের মতো নতুন বিষয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। সেটা হয়ে গেলে উচ্চমাধ্যমিকের খাতা আংশিক সময়ের শিক্ষকদের দেখতে হবে না।’