এই বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে একটা অন্য জিনিস দেখা যাচ্ছে। এবার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে শুভ্রাংশু সর্দার। তবে এই ছাত্রটি চিরাচরিত বিজ্ঞানের শাখা থেকে প্রথম হয়নি। তার বিষয়গুলি ছিল অন্যরকম। অর্থাৎ পিওর সায়েন্স বলতে যা বলা হয়—ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ এই বিষয়গুলি তার ছিল না। তাই বলা হচ্ছে পিওর সাযেন্স থেকে এবার প্রথম স্থান আসেনি। তবে শুভ্রাংশুই এবছরের উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
কেমন ছিল তার বিষয়গুলি? এবার উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে শুভ্রাংশু সর্দার। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্রের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬। তার বিষয়গুলি ছিল—বাংলা, ইংরেজি, ইকোনমিক্স, ম্যাথ, স্ট্যাটিসটিক্স এবং কম্পিউটার সায়েন্স। এই বিষয়গুলিকে একত্রে পিওর সায়েন্স বলে না। তাই পিওর সায়েন্স থেকে এবার প্রথম স্থান আসেনি বলে জানাচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। আজ, বুধবার এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়। উচ্চমাধ্যমিকে এই বছর (২০২৩) পাশের হারের নিরিখে শীর্ষে পূর্ব মেদিনীপুর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পাশের হার ৯৫.৭৫ শতাংশ। এই তালিকার দশম স্থানে রয়েছে কলকাতা। উচ্চমাধ্যমিকে এই বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮ লক্ষ ৫২ হাজার। যা ২০২২ সালের তুলনায় প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার বেশি ছিল। এবার প্রথম দশজনের মধ্যে রয়েছে ৮৭ জন। যা গতবারের তুলনায় অনেক কম।
এদিকে এবার পাশ করেছে ৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮০৭ জন ছাত্রছাত্রী। মোট পাশের হার ৮৯.২৫%। ছেলেদের পাশের হার ৯১.৮৬ শতাংশ। মেয়েদের মধ্যে পাশ করেছেন ৮৭.২৬ শতাংশ। এবার মেধাতালিকার প্রথম দশে রয়েছে ৮৭ জন পরীক্ষার্থী। প্রথম স্থান অধিকার করেছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। ছাত্র শুভ্রাংশু সর্দারের এই বিষয়গুলিতে নম্বর বেশি ওঠে। ছাত্রটি নম্বরও বেশি পেয়েছেন। তিনি মেধাবী ছাত্র। তবে পিওর সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড নয় বলে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর।
অন্যদিকে জেলাভিত্তিকর পাশের হারে এবার (৯৫.৭৫ শতাংশ) প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর। মাধ্যমিকেও পাশের হারে প্রথম ছিল পূর্ব মেদিনীপুর। এবার ৬০ শতাংশ ও তার বেশি নম্বর পেয়েছে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৫৮০ জন। অর্থাৎ ৩৮.৬৮ শতাংশ। ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে ৫২ হাজার ৮৭৮ জন। অর্থাৎ ৬.৬৬ শতাংশ। পাশের হারে গোটা রাজ্যে দশম স্থানে রয়েছে কলকাতা। মেধাতালিকায় প্রথম দশে রয়েছেন ৮৭ জন। তার মধ্যে শুধু হুগলিরই রয়েছে ১৮ জন পরীক্ষার্থী। ৪৯৪ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে তমলুকের চন্দ্রবিন্দু মাইতি, বালুরঘাটের অনুসূয়া সাহা এবং আলিপুরদুয়ারের পিয়ালি দাস। ৪৯৫ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় বাঁকুড়ার বঙ্গ বিদ্যালয়ের সুষমা পাল এবং উত্তর দিনাজপুরের আবু সানা।
আর কী ঘটেছে আজ? উচ্চমাধ্যমিকে কৃতী পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছে জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্রছাত্রীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। আগামীর প্রত্যেকটি দিন তোমাদের সাফল্যময় হোক।’ আগামী ৩১ মে সংসদের পক্ষ থেকে স্কুলগুলিকে উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।