করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। নিয়ম অনুয়ায়ী করোনা বিধি মেনে মৃতদেহ সৎকার করার ব্যবস্থা করতে হয় হাসপাতালকেই। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য দেহ পরিবারের হাতে না তুলে, নির্দিষ্ট জায়গায় দাহ করার সংস্থানও রয়েছে। কিন্তু তা না করে করোনায় আক্রান্তের দেহ তাঁর বাড়ির সামনে ফেলে পালিয়ে গেল বেসরকারি হাসপাতাল!
ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব যাদবপুর এলাকায়। অভিযোগের তির কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দিকে। যদিও হাসপাতালের তরফে এ বিষয়ে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব যাদবপুরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব যাদবপুরের মিডিল রোডের বাসিন্দা ৭১ বছর বয়সী সন্তোষ কুণ্ডু বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায়, তাঁকে পঞ্চসাযরের স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লালা রসের নমুনা পরীক্ষা হলে, গত ২৪ এপ্রিল তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপরেই তাঁকে যাদবপুরের কেপিসি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসা চললেও তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। শেষে ওই হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার সূত্রপাত ঘটে এর পরই। অভিযোগ উঠে, ওই প্রৌঢ়ের মৃতদেহ চাদরে মোড়া অবস্থায় তাঁর পূর্ব যাদবপুরের বাড়ির সামনে ফেলে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ!
ঘটনা ঘিরে মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। দ্রুত এই দেহ সরানোর দাবিতে পথ অবরোধও করেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান স্থানীয় পুর প্রতিনিধি। এই এলাকা কলকাতা পুরসভার ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত জট কাটে। তাঁর নির্দেশে পুরসভার তরফে মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। তবে করোনাকালে ঘোর সংকটের মাঝে এই ঘটনায় কেপিসি হাসপাতালের দায়িত্ববোধ নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। কেন মৃত্যুর পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ না করে তাদের তরফে মৃতদেহ অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাড়ির উদ্দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হল, চালকই বা কেন রাস্তায় দেহটি ফেলে চম্পট দিলেন? এসব প্রশ্ন উঠেই যাচ্ছে। যদিও গোটা ঘটনায় নিজেদের দায় অস্বীকার করেছে কেপিসি কর্তৃপক্ষ।