হাওড়া স্টেশনে গাড়ি পার্কিং করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন আলিপুরের ভুবনবাবু। তাতে তাঁর মেজাজ গিয়েছিল বিগড়ে। অরুনাভবাবু তাঁর ড্রাইভারকে বলেছিলেন, তিনি বারাণসী থেকে ফিরছেন। গাড়ি নিয়ে আসতে। ট্রেন থেকে নেমে চালককে ফোন করে গাড়ির খোঁজ করতেই চালক পার্কিং সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। তবে এবার আর কোনও সমস্যা হবে না। কারণ এক ক্লিকেই দেওয়া যাবে পার্কিং ফি। টোল পেমেন্ট করার ব্যবস্থা এবং ফাস্ট্যাগের মাধ্যমে পার্কিং পাওয়ার সুবিধা। ‘পার্ক প্লাস’ অ্যাপের সাহায্যে কেটে নেওয়া হবে টাকা। আর মিলবে পরিষেবা। ধীরে ধীরে এই ব্যবস্থা শহরের অন্যান্য জায়গাতেও চালু হবে।
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সাধারণ গাড়ি সুবিধা পাবে এমন নয়। বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত গাড়িও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে পার্কিং লটে পার্কিং ফি সহজেই জমা দিতে পারবে। এখন হাওড়া স্টেশনে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ভবিষ্যতে শহরের নানা প্রান্তে এই পরিষেবা চালু হবে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই পরিষেবা দিচ্ছে অ্যাপ সংস্থা ‘পার্ক প্লাস’। এই অ্যাপের সাহায্যে হাওড়া স্টেশনে প্রবেশের আগে দেখে নেওয়া যাবে ফাঁকা পার্কিং প্লেস। সেখানে পার্কিং করতে পারবেন গাড়ি। আবার কাজ শেষ করে সেখান থেকে নিশ্চিন্তে বেরিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: অল ইন্ডিয়া ট্রেড টেস্টে গোটা দেশে এগিয়ে বাংলা, ১১ জনকে অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রীর
আর যতক্ষণ গাড়ি পার্কিং থাকবে তার টাকা গাড়িতে লাগানো ফাস্ট্যাগ থেকে কেটে নেওয়া হবে। এই ব্যবস্থার জেরে জালিয়াতি এবং পার্কিংয়ের টাকা নিয়ে বচসার অবসান হবে। স্মার্টফোনে ‘পার্ক প্লাস’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। অ্যাপ খুলে পার্কিং স্পটে পছন্দমতো জায়গা খুঁজে নিয়ে নির্ধারিত টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। এমনকী চালানের বকেয়া টাকাও অনলাইনে মেটানো যাবে। এই অ্যাপ ব্যবহার করে সারা দেশের ইন্ডিয়ান অয়েলের যে কোনও পেট্রোল পাম্প থেকে কম দামে পেট্রোল, ডিজেল কেনা যাবে। টেস্ট ড্রাইভের জন্য পছন্দের গাড়িও বুক করা যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে। আর কম খরচে গাড়ি কেনার ঋণও মিলবে।
এছাড়া কোনওরকম ফি না দিয়েই ফাস্ট্যাগ কেনা ও সেটা রিচার্জ করতে পারবেন। এই বিষয়ে অ্যাপের কর্ণধার অমিত লাখোটিয়া বলেন, ‘দরপত্রের মাধ্যমে এখন হাওড়া স্টেশনের পার্কিংয়ের বরাত পেয়েছি। আগামী দিনে শিয়ালদা স্টেশন এবং কলকাতা বিমানবন্দর–সহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দরপত্র বেরলে অংশ নেব। মালিকদের গাড়ি ব্যবহার করার অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ করে তুলতেই এই উদ্যোগ। হাওড়া পুলিশের সহযোগিতায় এই অ্যাপ নিয়ে আসা হচ্ছে। আমাদের কাজ একটা নিরাপদ পার্কিং স্পট খুঁজে বের করা এবং সেটিকে দ্রুত ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা। স্মার্ট পার্কিং পরিষেবাকে আগামী ৩–৪ মাসে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে দেওয়াই লক্ষ্য।’