দেশের ব্যস্ততম স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম হল হাওড়া স্টেশন। প্রতিদিন এই স্টেশন হয়ে যাতায়াত করেন লক্ষ লক্ষ যাত্রী। ফলে নিয়মিত ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করতে হয় এই স্টেশনটি। এতো বড় স্টেশন পরিষ্কার করার জন্য প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে জলের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই জলের ব্যবস্থা করতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে রেল। এরজন্য বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে তা পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে। এরফলে শুধুমাত্র যে জলের অপচয় বন্ধ হচ্ছে তাই নয়, পরিবেশের উপরেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে হাওড়া স্টেশনে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: হাওড়া স্টেশন থেকে সাবওয়ে, পৌঁছে যাবে মেট্রোতে,ভিড় সামলাতে পরিকল্পনা রেলের
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া স্টেশনের ছাদের মোট আয়তন ৭৮৮৩১.৬০ বর্গমিটার। এই অংশে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের মাত্রা ১৬৪.৯৫০ মিলিমিটার এবং স্টেশনের আশেপাশের এলাকায় মোট বার্ষিক বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে ৯৭৫২৪.৫৪ ঘনমিটার। এই প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে রাখলে তা পুনর্ব্যবহার করা যেতে পারে। সেই কারণেই হাওড়া স্টেশনের ছাদে এই প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টির জল সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বার্ষিক মোট বৃষ্টির ৭৩,০০,০০০ লিটার জল পুনর্ব্যবহার করার যোগ্য।
কীভাবে সংগ্রহ করা হচ্ছে বৃষ্টির জল?
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া স্টেশনে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে কনস্ট্রাকশন পিট নির্মাণ করা হয়েছে। বৃষ্টির জল প্রথমে ইটিপি প্ল্যান্টের মাধ্যমে পরিশোধন করা হচ্ছে । এর পর সেই জল প্ল্যাটফর্ম ও স্টেশন চত্বর ধোয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। এরফলে স্টেশনে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা ছাড়াই শুধুমাত্র বৃষ্টির জল থেকে স্টেশন, রেল লাইন ধোয়া সম্ভব হচ্ছে।
জল সংরক্ষণের ফলে স্টেশন প্রাঙ্গণে ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। ফলে জলের অপচয় কমানো সম্ভব হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, স্টেশনের ৯০ শতাংশ এলাকা ছাউনি ও ছাদ দিয়ে ঢাকা রয়েছে, যা বৃষ্টির জল সংগ্রহের জন্য উপযোগী। তাছাড়া, এই জল পুনরায় ভূগর্ভে পৌঁছনোর ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর বৃদ্ধি পাবে। ভবিষ্যতে জল সংকট মোকাবিলায় যা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শুধু তাই নয়, এরফলে জলের খরচ কমে এসেছে, যা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।