নিস্তব্ধ স্টেশন দুটির নাম—হাওড়া এবং শিয়ালদহ। এই নিস্তব্ধতার কারণ হল হারিয়ে যাওয়া চেনা ছবি। তাই আজ এই দুটি স্টেশনকে অনেকেরই অচেনা লাগছে। কারণ এখানে লোকাল ট্রেনের আসা–যাওয়া এখন নেই। মানুষের ভিড় সেভাবে চোখে পড়ছে না। হাতে গোনা কিছু দূরপাল্লার স্পেশাল ট্রেন আছে৷ আর কিছু স্টাফ স্পেশাল৷ তাই দুর্গাপুজোতে হাওড়া–শিয়ালদহ অচেনা হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করোনাভাইরাস। যার জেরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছেদ পড়েছে। অথচ ফি বছর পুজোর সময় অন্য রূপে দেখা যেত এই স্টেশন দুটিকে। সেখানে আজ নেই কোনও ব্যস্ততা। বরং নিস্তব্ধতা গ্রাস করেছে এই দুটি স্টেশনকে। তার মধ্যেই শিয়ালদহ শাখায় নাইট স্পেশাল ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আবার আজ বিকেল থেকে বিধাননগর স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াচ্ছে না। তাই সবমিলিয়ে চেনা স্টেশন দুটি কেমন যেন অচেনা ঠেকছে অনেকের কাছেই।
তবে আগের মতোই স্টেশন দুটি সেজে উঠেছে আলোকসজ্জায়। দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে আলোকমালায় ঝলমল করছে হাওড়া–শিয়ালদহ। কিন্তু বিরাজমান নিস্তব্ধতার মধ্যে এটুকুই যেন প্রাপ্তি। হাওড়া স্টেশন বিল্ডিং দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। সেখানে আলো দিয়ে সাজানো হওয়ায় আরও সুন্দর লাগছে। এবার স্টেশনটি সাজানো হয়েছে তিন রঙা আলোয়। তাতেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মা দুর্গার মূর্তি।
পাশাপাশি ঢাক আর কাঁসরের মেলবন্ধনে সেজে উঠেছে স্টেশন চত্বরও। যদিও ফুড প্লাজা প্রতিবার সাজানো হয়। এ বার আর সেই ছবি ধরা পড়েনি। শিয়ালদহ স্টেশন সাজানো হয়েছে বাহারি সবুজ আলোর মালায়। সামনের নির্মীয়মাণ মেট্রো স্টেশনও আলোর মালায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। শিয়ালদহ স্টেশনের ভেতরের ভোলবদল হয়েছে। যদিও আগের মতো যাত্রী সেভাবে না থাকায় গমগম করা ব্যাপারটা এ বার নেই৷ তবে দূরপাল্লার ট্রেন ধরতে যাঁরা আসছেন, তাঁরাও বলছেন মন খারাপ লাগছে বটে, তবে স্টেশনের বাহারি আলো পুজোর মুড তৈরি করে দেয়।
এই বিষয়ে পূর্ব রেল সূত্রে খবর, বরাবরের মতো এবারও হাওড়া স্টেশনকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। একইসঙ্গে সেজে উঠেছে আসানসোল ও কলকাতা স্টেশন। আসানসোল স্টেশনের ‘ট্রেন অন হুইলস’ রেস্তরাঁর ব্যাপক চাহিদা আছে। শিয়ালদহ স্টেশনকেও সাজিয়ে তোলা হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে উঠে ছন্দে ফিরবে হাওড়া–শিয়ালদহ বলে আশা করা হচ্ছে।