বকেয়া সম্পত্তি করে ছাড় দিয়ে লক্ষ্মীলাভ করে পরিষেবা বন্ধ করল কলকাতা পুরসভা।গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিল পুর কর্তৃপক্ষের। লকডাউন চলার কারণে শহরের পুরসভার অধীনস্ত অঞ্চলগুলোয় বসবাসকারী অধিকাংশ করদাতারা বকেয়া কর জমা দিতে পারেননি। অন্য দিকে, সম্পত্তি কর আদায়ের পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছিল।
একটা সময় এমনও আসে, যখন বকেয়া কর পুনরুদ্ধারের অভাবে পুরসভার ভাঁড়ারে টান পড়তে শুরু করে। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে পুরসভার কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতার বিভিন্ন এলাকার সম্পত্তি করদাতারা যাতে সময় মতো বকেয়া কর পরিশোধ করতে পারেন, সে কারণে কর ছাড়ের প্রকল্প ঘোষণা করে পুরসভা। এরপর বকেয়া কর আদায়ে পুর আধিকারিকরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েন।
পুরসভার রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত সাত মাসে মোট বকেয়া সম্পত্তি কর আদায় হয়েছে ৩৫,৭৫,৪২,৬৫৬ টাকা। কলকাতা পুরসভার কাছে এই সাত মাসে যে তথ্য জমা পড়েছে, তার মধ্যে থেকে শহরের আটটি কর আদায় কেন্দ্র এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ অক্টোবর থেকে সম্পত্তি কর আদায়ের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের ব্যবস্থা চালু করে পুরসভা। এই বিশেষ কর ছাড় প্রকল্পের প্রাথম দিকে সুদের উপর ১০০ শতাংশ ছাড় ছিল অর্থাৎ করের উপর কোনও সুদ দিতে হচ্ছিল না করদাতাদের। তবে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়া হয়। দেখা যায়, ১০০ শতাংশ কর ছাড় দিয়েও বকেয়া কর আদায়ে হয় প্রায় ৩১৯,৯৫,২৫,৭৭৩ টাকা। এরপর এরপর গত দু’মাস এপ্রিল ও মে মাসে ১০০ শতাংশ থেকে সুদের হারে ছাড়ের পরিমাণ কমিয়ে ৭০ শতাংশ করা হয়। তারপর দেখা যায়, এই দু’মাসের বকেয়া কর আদায়ে হয়েছে ৪২৮,৬৫,৯৬৯ টাকা। এর পাশাপাশি সাসপেন্স খাতেও বকেয়া কর জমা হয় ২১১,৫১,৫০,৯১৪ টাকা। কলকাতার প্রায় ৭০ হাজার করদাতারা এই অর্থ পৌরসভায় জমা দেন।
এখানেই শেষ নয়, বকেয়া কর ছাড়ের প্রকল্প-সহ বকেয়াহীন সম্পত্তি কর আদায়ের পরিমাণ প্রায় ১২০০ কোটিতে পৌঁছেছে। যা করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নজিরবিহীন বলেই দাবি করছেন পুরকর্তারা। এই পরিমাণে কর আদায়ে যথেষ্ট স্বস্তি ফিরেছে রাজস্ব দপ্তরে। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট উচ্ছসিত পুর আধিকারিকরা। তারা বলছেন, এই কর ছাড় প্রকল্পে প্রচুর মানুষ সাড়া দিয়েছেন।