কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে একাধিক নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ক্যাবিনেট বৈঠকে। রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে নেওয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সে ব্যাপারেই জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মূলত রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে নতুন কিছু ভাবনা, পদক্ষেপের কথা বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী দাবি, পশ্চিমবঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগের জোয়ার আসছে। আর তাতে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে।
গত বছরই নিউ টাউনে ১০০ একর জমিতে গড়ে ওঠে সিলিকন ভ্যালি। সে ব্যাপারে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিলিকন ভ্যালিতে ১০০ একর জমি দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম অত জমি হয়তো খালি পড়ে থাকবে। কেউ আসবে না। কিন্তু ইতিমধ্যে সব পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আরও ১০০ একর জমির দাবি আসায় তাও দেওয়া হল। ওই জমি পাবে ২০টি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি সেখানে সহযোগী শিল্পও গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থান হবে হাজার হাজার ছেলেমেয়ের।’
এদিকে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগ করতে চেয়েঠে উইপ্রো, ইনফোসিসও। তিনি বলছিলেন, ‘রাজ্যে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল করতে চেয়েছে উইপ্রো। তারা জমি চেয়ে চিঠি দিয়েছে। উইপ্রো যেভাবে শিল্প করতে চায়, সেভাবে দিয়েছি। মন্ত্রিসভায় এ ব্যাপারেও এদিন ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’ একটা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার গড়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ইনফোসিসকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি এদিন জানান, তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছে ওই বহুজাতিক সংস্থা। সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইনফোসিসের পরিকল্পনা জমা পড়বে ২০ ডিসেম্বর। আর ২০২১ সালের জুলাই মাসে নির্মাণকাজ শুরু হবে। কাজ শেষ হতে দু’বছর সময় লাগবে।’
তবে শুধু কলকাতা, সল্টলেক বা নিউটাউন নয়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তেই বিনিয়োগ হচ্ছে বলে এদিন মমতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে ইউনিট খুলতে চেয়েছিল স্টার সিমেন্ট। তাদের জলপাইগুড়িতে একটি জমি দেওয়া হয়েছে। এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেখানে কারখানা গড়ে উঠলে স্থানীয়দের একটা বিরাট কর্মসংস্থান হবে।’
এর পাশাপাশি, বকেয়া খাজনায় সুদ মকুবের কথাও এদিন জানিয়েছেন মমতা। এ বছর লকডাউন এবং তার জেরে কঠিন পরিস্থিতিতে অনেকেই ১৪২৬ বঙ্গাব্দের জমির খাজনা মেটাতে পারেননি। সেই বকেয়া খাজনা মেটাতে গেলে ৬.২৫ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার কথা। কিন্তু এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২১ সালে জুন মাসের মধ্যে ওই বকেয়া খাজনা জমা করলে কোনও সুদ দিতে হবে না।
এদিকে, এবার সরকার বছরে ৬১৭টি মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, করোনার জেরে লকডাউন এবং তার পরেও কোনও মেলা করা যায়নি। হস্তশিল্পী, ডোকরাশিল্পী থেকে শুরু করে কারিগর, বিক্রেতা সকলেই বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কোনও বিক্রিবাটা না হওয়ায় আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি রাজ্যের হাজার হাজার শিল্পকর্মীরা। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই বছরে সারা রাজ্যের মোট ৬১৭টি মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।