তাঁকে ও শুভেন্দু অধিকারীকে খুন করতে রাশিয়া থেকে ভয়ঙ্কর বিষাক্ত রাসায়নিক এনেছে তৃণমূল। সেই রাসায়নিক স্পর্শ করলেই কয়েক দিনের মধ্যে মৃত্যু হয় ব্যক্তির। গত ১৬ নভেম্বর সিআইডির তলবে ভবানী ভবনে হাজিরা দেওয়ার অর্জুন সিংয়ের এহেন দাবিতে হাসাহাসি করেছিলেন অনেকেই। তৃণমূল নেতার বাড়িতে তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক ক্যালিফোর্নিয়াম উদ্ধারের ঘটনায় ফের একবার সরব হলেন তিনি। অত্যন্ত তেজস্ক্রিয় এই রাসায়নিকের কাছে কয়েক ঘণ্টা থাকলেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া প্রায় অবধারিত। পারমাণবিক অস্ত্র ও পারমাণবিক চুল্লিতে ব্যবহার হওয়া এই তেজস্ক্রিয় ধাতু কী করে তৃণমূল নেতার কাছে পৌঁছল আর রাজ্য পুলিশের STF কী করছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্জুন।
বুধবার রাতে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ নকশালবাড়ির বেলগাছি চা বাগানে তৃণমূল নেতা ফ্রান্সিস এক্কার বাড়ি থেকে ক্যালিফোর্নিয়াম নামে এক তেজস্ক্রিয় ধাতু উদ্ধার করে। NDRFএর কর্মীরা তেজস্ক্রিয়তা প্রতিরোধী বিশেষ ধরণের পোশাক ও অক্সিজেন মাস্ক পরে উদ্ধার করেন রাসায়নিকটি। শুধুমাত্র সরকারি গবেষণাগারে এই ধাতু মোটা সিসার পাতের বাক্সে বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে রাখা হয়। হাতে পাওয়া তো দূরের কথা সাধারণ মানুষের তা দেখারও অনুমতি নেই। ১ গ্রাম ক্যালিফোর্নিয়ামের দাম ১৭ কোটি টাকা। পৃথিবীর সব থেকে দামি পদার্থগুলির মধ্যে একটি এটি। সেই ক্যালিফোর্নিয়াম কী করে তৃণমূল নেতার কাছে এল সেই প্রশ্ন তুলেছেন অর্জুন।
সংবাদমাধ্যমে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই সন্দেহ করছিলাম পশ্চিমবঙ্গের সরকার অলিখিতভাবে জঙ্গিদের সঙ্গে আছে। মানুষ দেখছে, কিন্তু কিছু করতে পারছে না। আমরা সব সময় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের দাবি করছি। আজকে তা প্রমাণ হল। কিছুদিন আগে আমি বলেছিলাম এমন একটা রাসায়নিক আমদানি করা হয়েছে যেটা মানুষের কাছে স্প্রে করে দিলে মানুষ মাস দুয়েকের মধ্যে মারা যাবে। আজকে সেটা প্রমাণ হল। ফ্রান্সিস এক্কার বাড়ি থেকে উদ্ধার হল। এতে বোঝা গেল বাংলা সন্ত্রাসবাদীদের কাছে মরুদ্যান হয়ে গেছে।’
এর পরই রাজ্য পুলিশের STFকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘ওদের কথা বাদ দিন। আরজি করের ঘটনায় খুনিদের যারা বাঁচানোর চেষ্টা করেছে সেই আধিকারিকদের STFএ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। STF নিজেরাই অস্ত্র রেখে নিজেরাই উদ্ধার করে। তার পর সংবাদমাধ্যমে সেটা সাফল্য বলে দাবি করে। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট দেয় না। ফলে তারা কয়েকদিন পরে জামিন পেয়ে যায়।’
বলে রাখি, ধৃত ফ্রান্সিস এক্কার স্ত্রী তৃণমূলের নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। অভিযুক্ত নিজে বন দফতরের অস্থায়ী কর্মী। আগে বেলগাছি চা বাগানে কাজ করতেন ফ্রান্সিস। সেই কাজ ছেড়ে দিলেও চা বাগানের কোয়ার্টার ছাড়েননি তিনি।