তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেজন্যই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকে যাননি। এমনই দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। সঙ্গে জানালেন, আপাতত নিজের ‘যন্ত্রণায়’ এতটাই কাতর যে ‘এ সবের’ মধ্যে তিনি এখন নেই।
মঙ্গলবার হেস্টিংয়ে বিজেপির কার্যালয়ে দিলীপের ডাকে রাজ্যস্তরের নেতাদের বৈঠক হয়। সেখানে আসেননি মুকুল। একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়, স্ত্রী'র শারীরিক অবস্থার কারণ দর্শিয়ে বৈঠকে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক। কেউ কেউ আবার দাবি করেন, সদ্য করোনাভাইরাস মুক্ত হয়েছেন মুকুল। তাই সশরীরের হেস্টিংসে বিজেপির কার্যালয়ে বৈঠকে যোগ দিলে ঝুঁকি থেকে যেত। সেজন্য বৈঠকে যাননি। যদিও পরে আনন্দবাজার পত্রিকায় মুকুল জানান, তাঁকে বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি
সেই ব্যাখ্যার কিছুক্ষণ পর দিলীপ অবশ্য দাবি করেন, মুকুলের পারিবারিক সমস্যা আছে। স্ত্রী কৃষ্ণা রায় অসুস্থ হওয়ায় আসতে পারেননি মুকুল। যদিও দিলীপ দাবি করেন, মুকুলের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। যা ‘খবর’ পেয়েছেন, তাই বলেছেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, দিলীপ যে মুকুলের গরহাজিরার বিষয়ে যে ‘খবর’-এর মাধ্যমে জানতে পারছেন, তা থেকেই স্পষ্ট যে দুই নেতার মধ্যে ‘দূরত্ব’ ক্রমশ বাড়ছে। তাঁদের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের আগেই থেকেই দিলীপ ও মুকুলের মধ্যে ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরও মুকুলের সেভাবে দেখা পাওয়া যায়নি। জয়ের পরও খুব একটা দেখা যায়নি মুকুলকে। বরং বিধায়ক হিসেবে প্রথমবার বিধানসভায় গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন। উসকে দিয়েছিলেন জল্পনা। তবে দিলীপের সঙ্গে মুকুলের ‘দূরত্ব’ আরও বেড়েছে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের স্ত্রী হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর থেকে। সেইসময় নাকি কোনও বিজেপি নেতা দেখা করতে আসেননি বা খোঁজ নেননি বলে ঘনিষ্ঠ মহলে অনুযোগ করেছিলেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু। তারইমধ্যে পুুরনো সহকর্মী তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল-জায়াকে হাসপাতালে দেখতে যান। সেইসময় মুকুল না থাকলেও ছিলেন শুভ্রাংশু। তিনি রীতিমতো আপ্লুত হন। অভিষেক বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই হাসপাতালে আসেন দিলীপ। তা নিয়ে মুকুল দাবি করেন, দিলীপ আসার বিষয়ে তাঁর কাছে কোনও খবর ছিল না। তার পালটা দেন দিলীপও। সেই জল্পনা শেষ হতে না হতেই নতুন করে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি সামনে নিয়ে এল মুকুলের গরহাজিরা।