আপনি অভিষেকপন্থী নাকি মমতাপন্থী? গত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলের অন্দরে এই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছিল। যে দলটা তৈরির পেছনে সবথেকে যার অবদান বেশি তিনি আর কেউ নন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে দেখা যাচ্ছিল একাধিক ক্ষেত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন দলের অন্দরে রদবদল হতে পারে। এমনকী প্রবীণদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছিলেন তিনি। উসকে উঠছিল নবীন-প্রবীন দ্বন্দ্ব। তবে এবার মমতা কার্যত জানিয়ে দিলেন তিনিই দলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।
এবার সূত্রের খবর, বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে মমতা কার্যত বলেই দিয়েছেন দল দেখবেন তিনিই। অর্থাৎ যাবতীয় জল্পনায় কার্যত জল ঢেলে দিলেন মমতা।
বিধানসভায় দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। সেখানে তিনি জানিয়ে দেন, দল আমি আর বক্সীদাই দেখব। এমনকী দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনও নেত্রী নিজে হাতে সাজাবেন বলে জানিয়েছেন।
কার্যত দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও ভোট এলে দলের নেতারা বলে ওঠেন সব কেন্দ্রে মমতাই প্রার্থী। বিরোধীরা ঠাট্টা করে বলেন, দলের ভেতর একটাই পোস্ট বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। তবে এবার মমতা কার্যত আক্ষরিক অর্থেই জানিয়ে দিলেন দলের অন্দরে প্রথম ও শেষ কথা তিনিই বলবেন। আর সঙ্গে থাকবেন সুব্রত বক্সী।
মমতার রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘদিনের সঙ্গী সুব্রত বক্সী। দলের একেবারে বুথ স্তরের কর্মী থেকে দলের সাংসদ সর্বত্র তাঁর গতিবিধি। জেলাস্তরে দলের একাধিক বৈঠকে তিনিই একমাত্র অধিকারী দলের নেতাদের অবস্থান ঠিক করার। সেই প্রবীণ নেতাকে ফের বিরাট স্বীকৃতি দিলেন মমতা। সেই সঙ্গেই দলের অন্দরে প্রবীণদের কোণঠাসা করার যে প্রবনতা শুরু হয়েছিল তাকে অঙ্কুরেই বিনাশ করলেন নেত্রী।
মন্ত্রী হলেই মাতব্বর নয়। জানালেন মমতা। সেই সঙ্গেই ছাত্র যুব সংগঠনের ভূমিকায় তিনি সন্তুষ্ট নন। পাশাপাশি ব্লকস্তরের সংগঠনের উপরেও তিনি এবার নজর রাখবেন বলে খবর।
তবে সম্প্রতি দলের কর্মসমিতির বৈঠকেই বোঝা গিয়েছিল এবার একেবারে শক্ত হাতে দলকে ধরছেন তিনি। আর তারই অঙ্গ হিসাবে একাধিক নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। টিভিতে দলের হয়ে যারা বলবেন তার একটি তালিকা সম্প্রতি সামনে এসেছিল। সেই তালিকায় রয়েছেন, পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কলকাতার কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী, শ্রমিক নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্য়ায়, দলের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য, টিএমসিপির প্রাক্তন সভানেত্রী জয়া দত্ত, মৃত্যুঞ্জয় পাল. সন্দীপন সাহা, প্রদীপ্ত মুখোপাধ্য়ায়, ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন, প্রাক্তন বিধায়ক দীনেশ বাজাজ ও তন্ময় ঘোষ।